ঢাকা
২৬শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
ভোর ৫:১৫
logo
প্রকাশিত : এপ্রিল ১৩, ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্কে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে টানতে পারে চীন

২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল সকালে কম্বোডিয়াবাসী ঘুম থেকে উঠেই শুনলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা তাদের পণ্যে ৪৯ শতাংশ শুল্ক বসেছে। এই সিদ্ধান্ত দেশটির পোশাক খাতের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। কম্বোডিয়ার মোট রপ্তানি আয়ের অর্ধেকেরও বেশি আসে এই খাত থেকে এবং যার প্রধান গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে। যদিও ৯ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই শুল্কের বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন, তবে এটি যে আবার ফিরে আসতে পারে—তা স্পষ্ট।

এ অবস্থায় আগামী ১৭ এপ্রিল কম্বোডিয়া সফরে যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার পূর্ব-নির্ধারিত এই সফর কিছুটা সান্ত্বনার বার্তাই বয়ে এনেছে দেশটির জন্য। এক কম্বোডীয় কর্মকর্তা বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিপ্রাপ্ত এক ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। এখন শি জিনপিং, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির নেতা, আমাদের দেশে আসছেন—এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে।

গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে ট্রাম্প যে কঠোর শুল্কনীতির ঘোষণা দেন, তার অন্যতম প্রধান ভুক্তভোগী ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। কম্বোডিয়ার পাশাপাশি ভিয়েতনাম পেয়েছে ৪৬ শতাংশ শুল্ক, থাইল্যান্ড ৩৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ এবং ফিলিপাইন ১৭ শতাংশ। মালয়েশিয়ার পণ্যের ওপর ২৪ শতাংশ শুল্ক ধার্য হলেও সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে ছাড় থাকায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে তারা। পরবর্তীতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আংশিক প্রত্যাহারের ফলে অঞ্চলজুড়ে ৯০ দিনের জন্য ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক চালু হয়েছে।

সিঙ্গাপুরও এই ১০ শতাংশ হার থেকে ছাড় পায়নি—যদিও তারা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কোনো শুল্ক আরোপ করে না, বরং দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যে ঘাটতিই রয়েছে। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং গত ৮ এপ্রিল পার্লামেন্টে বলেন, নিয়মভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য ও উদার বাণিজ্যের যুগ শেষ। যুক্তরাষ্ট্র নিজেই যে ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছিল, সেটিকেই এখন প্রত্যাখ্যান করছে।

এই প্রেক্ষাপটে শি জিনপিংয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফর মনে হচ্ছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আগামী ১৪ এপ্রিল তিনি প্রথমে যাবেন ভিয়েতনামে। সেখানে অবকাঠামো ও উচ্চ প্রযুক্তি উৎপাদনে বিনিয়োগের ঘোষণা দিতে পারেন। এরপর যাবেন মালয়েশিয়ায়, যেখানে একই ধরনের আরও ঘোষণা আসবে। কম্বোডিয়া হবে সফরের শেষ গন্তব্য।

কূটনৈতিক ভারসাম্য
তবে এই অঞ্চলের কোনো দেশই, এমনকি শি জিনপিংয়ের গন্তব্য তিনটি দেশও, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না। বরং ট্রাম্পের ঘোষণাকে তারা প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে আলোচনার সূচনা হিসেবে গ্রহণ করেছে।

ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট তো লাম ট্রাম্পকে প্রথম ফোন করা নেতাদের একজন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক শূন্য করার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং একজন আলোচককে ওয়াশিংটনে পাঠিয়েছেন। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীও একই ধরনের ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। মালয়েশিয়া একটি প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে সরবরাহ চেইন ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ বিষয়ে চুক্তির জন্য।

অঞ্চলটি জানে, চীন বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো প্রতিশোধমূলক ক্ষমতা তাদের নেই। আসিয়ান-এর নেতৃত্বে সমন্বিত প্রতিক্রিয়া দেওয়ার চেষ্টা থাকলেও বিশ্লেষকরা এতে খুব একটা আশাবাদী নন।

অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই শুল্কের হুমকি হয়তো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে চীনের দিকে ঠেলে দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ইঙ্গিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলো—যেমন ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর—তারা এই বাণিজ্য বিরোধকে নিরাপত্তার সঙ্গে জড়াতে চায়নি। চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক থাকলেও ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে শি জিনপিং নতুন কোনো নিরাপত্তা চুক্তি করবেন বলে আশা করা হচ্ছে না।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram