চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পুলিশের সামনে যাত্রীবাহী দুটি নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুটি নৌকার যাত্রী ও ৬ থেকে ৭ জন গরু ব্যবসায়ীর কয়েক লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নিয়েছেন ডাকাতরা। এসময় মোসলেম নামে এক ব্যক্তি সহ ৫/৬ জন যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল ঘাটের উত্তরে দুটি নৌকায় ডাকাতির এ ঘটনা ঘটেছে।
ডাকাতির শিকার নৌকার মাঝি ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটের কাছে দুটি যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতরা হামলা করে। নৌকা দুটি রাজিবপুরের কোদালকাটি ও পাখিউড়া থেকে চিলমারীর উদ্দেশে আসছিল। মাঝপথে যাত্রী নেওয়ার জসন্য কড়াইবরিশাল খেয়া ঘাটের ভিড়লে সেখানেই আক্রমণ করে শসস্ত্র ডাকাতদল। তারা গুলি ছুঁড়ে নৌকায় থাকা যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ডাকাতি করে চলে যায়। যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয়রা ডাকাতদের ধাওয়া করে। খেয়া ঘাটে একটি নৌকায় থাকা চিলমারী থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্য থাকলেও তাদের সামনে দিয়ে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ সদস্যরা নির্বিকার ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী যাত্রী ও স্থানীয়রা। এ সময় ডাকাতদের আক্রমণে মোসলেম নামে এক ব্যক্তি সহ ৫/৬ জন যাত্রী আহত হয়েছে।
নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘খেয়া ঘাটে গরু ব্যবসায়ীদের নৌকা ছিল। ওদের নৌকায় ডাকাতি করতে আইসা আমার নৌকাতেও ডাকাতি করে। ১০ থেকে ১৫ জন ডাকাত ছিল। দুই নৌকা থাইকা টাকা লুট কইরা ডাকাতরা চইলা যায়। আমরা কিছু করতে পারি নাই।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাঝি মোসলেম আরও বলেন, ‘‘ডাকাতরা একটা গুলি করছে। ওদের হাতে বেকিও ছিল। আমার কাছে তিন যাত্রীর ৫৭ হাজার টাকা আছিল। আমাক বারি (আঘাত) দিয়া সেটা কাইরা নিছে। কয়েকজন যাত্রীর কাছেও টাকা নিছে। গরুর ব্যাপারিগো কাছেও টাকা কাইরা নিছে। ওগো অনেকে পানিত লাফ দিছে। পাশে পোশাক পড়া তিনজন পুলিশ আছিল। কিন্তু তারা আগায় আহে নাই।’
কড়াইবরিশাল এলাকার ইসহাক নামে এক নৌকা যাত্রী বলেন, 'দুইটি নৌকায় যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের থেকে ৪/৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। পরে কাছে গিয়ে দেখি অনেকে পানিতে লাফ দিছে। সাথে থাকা টাকা পানিতে ভিজে গেছে।'
কড়াইবরিশাল এলাকার বাসিন্দা আজম মিয়া জানান, গুলির শব্দ ও যাত্রীদের চিৎকারে ঘাটের কাছে থাকা স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যান। তারা নৌকা নিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করেন। কিন্তু ততক্ষণে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘাটে পুলিশের একটি নৌকা থাকলেও তারা যাত্রীদের সহায়তায় এগিয়ে যাননি।
ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ীদের বরাতে আজম মিয়া বলেন, ব্যাপারিদের কয়েক লাখ টাকা ডাকাতরা নিয়া গেছে। আমরা ধাওয়া করছিলাম। পুলিশ একটা ফাঁকা গুলি করলেও ডাকাতদের ধরা যাইতো। তারা আগায় আসে নাই।’
চিলমারী মডেল থানার ওসি মুশাহেদ খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ৩ সদস্যের একটি পুলিশ টিম পাশে ছিল, তারা কাছাকাছি যেতেই ডাকাত দল চলে যায়।