

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস (আটাব)-এর প্রাক্তন সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ, প্রাক্তন মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ, প্রাক্তন অর্থ সচিব লায়ন শফিকুল্লাহ নান্টু (২০২৩-২০২৫ মেয়াদ) এক সংবাদ বিবৃতিতে আটাবের সাবেক প্রশাসক জনাব মোতাকাব্বির আহমেদের প্রেরিত আর্থিক অনিয়ম বিষয়ে চিঠির জবাব দিয়েছেন।
বিবৃতিতে জানান, গত ০৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে সরকার জনাব মোতাকাব্বির আহমেদকে আটাবের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন এবং ২২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে তাঁকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। দীর্ঘ ৭৮ দিন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি আটাব নির্বাচনের প্রধান দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হন। নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠনেও তিনি উদ্যোগ নেননি—যা মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশের পরিপন্থী।
তাঁরা আরও বলেন, নির্বাচিত কমিটি (২০২৩–২০২৫) আটাব সদস্যদের স্বার্থে এবং জনকল্যাণে টিকিট সিন্ডিকেট ও উচ্চমূল্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু জনাব মোতাকাব্বির আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই টিকিট সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তার সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করে। এর পর থেকে আন্তর্জাতিক (মধ্যপ্রাচ্যের) টিকিটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়—যা এক পর্যায়ে ৪০,০০০ টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, টিকিট সিন্ডিকেট ও অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির প্রতারণা রোধে তিনি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বিষয়টি নিয়ে ১৫ অক্টোবর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তাকে চিঠি দিলেও তিনি তা উপেক্ষা করেন। আটাব সদস্যদের সমস্যা সমাধানে তিনি দায়িত্বশীল ভূমিকা না নিয়ে, কোনো সাধারণ সভাও আহ্বান করেননি।
আরো বলেন, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার দিনই মোতাকাব্বির আহমেদ একটি তড়িঘড়ি চিঠিটি ইস্যু করেন, যা ভুল ও বিকৃত তথ্যসমৃদ্ধ। উক্ত চিঠি বিভিন্ন মিডিয়া ও হোয়াটসঅ্যাপে প্রচার করে তিনি আটাবের সদ্য প্রাক্তন নির্বাচিত কমিটিকে অসম্মানিত করার চেষ্টা করেছেন। আইনি এখতিয়ার না থাকা সত্ত্বেও এমন চিঠি ইস্যু করা নিন্দনীয়।
বিবৃতিতে আরও জানান, আর্থিক লেনদেন প্রসঙ্গে প্রশাসকের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে আটাবের ব্যাংক হিসাব, আয়-ব্যয়ের খাত ও কার্যপ্রণালী বিস্তারিতভাবে তাকে জানানো হয়। আলোচনার সময় আটাব নির্বাহী সচিব, হিসাবরক্ষকসহ প্রায় ১৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক প্রশাসক আটাবের ব্যাংক হিসাব ও তথ্য নিজের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে নিয়ে গেছেন—যা তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা সৃষ্টি করে।
বিবৃতিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রশাসক তার চিঠিতে আটাবের ফান্ডে ৩৪,০৫,৭৯৬ টাকা থাকার কথা বলেছেন, যা বাস্তবে ভুল। আটাবের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে ২ কোটি ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৭৪ টাকা ব্যালেন্স রয়েছে (প্রকাশের তারিখ ২৮/১০/২০২৫)।
তারা বলেন, “আটাবের ব্যাংক হিসাবে দুই কোটিরও বেশি টাকা থাকা সত্ত্বেও থাইল্যান্ড ফেম ট্রিপের অর্থ ফেরত না দেওয়া একটি অযৌক্তিক, হয়রানিমূলক ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত।”
উল্লেখ করেন, আটাবের আয়-ব্যয়ের প্রায় ৪০-৫০টি খাত রয়েছে, যা একটি সাধারণ ব্যাংক হিসাবে পরিচালিত হয়। খাত অনুযায়ী পৃথক কোনো অ্যাকাউন্ট না থাকলেও সব খাতের আয়-ব্যয় সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে নির্বাচিত কমিটির অনুমোদনক্রমে সম্পন্ন হয়।
সর্বশেষে উল্লেখ করেন , “আটাবের সব আর্থিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতার নথি অফিসে সংরক্ষিত রয়েছে, যা পর্যালোচনার জন্য উন্মুক্ত এবং আটাবের গঠনতন্ত্রের ৫৩/ক ধারা এখানে প্রযোজ্য নয়।”

