ঢাকা
২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৮:৫০
logo
প্রকাশিত : জুন ২৬, ২০২৫

দেশকেই ডুবিয়ে দিচ্ছেন নেতানিয়াহু, পালিয়ে যাবেন মিয়ামি

বিদেশ সফরে মাত্র দশদিন কাটিয়েই কেউ যদি ফিরে এসে দেখে- তার দেশ পাগলের রাজত্বে পরিণত হয়েছে- তাহলে সেটা নিছক অতিশয়োক্তি নয়। ইসরাইলের বর্তমান অবস্থা ঠিক তেমনই। প্রতি রাতেই খবর খুলে দেখা যায়, একদিনে যা ঘটছে, অন্য কোনো স্বাভাবিক দেশে তা এক বছরের জন্য যথেষ্ট। প্রচলিত যুক্তি হলো স্থিতিশীল রাষ্ট্র একদিনে এত সংকট তৈরি করে না। কিন্তু এই বিশৃঙ্খলা আসলে পূর্বপরিকল্পিত, ঠাণ্ডা মাথার চাল। লেখক জেন রিড বলেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেই তৈরি করেছেন এই বিশৃঙ্খলার ‘বিষযন্ত্র’। এর উদ্দেশ্য সত্য-মিথ্যা, সাফল্য-ব্যর্থতা, ন্যায়-অন্যায়কে এমনভাবে গুলিয়ে ফেলা যাতে তার নিজের অপরাধ আড়াল হয়ে যায়।

এক সময় সপ্তাহে এক-দু’টি মিডিয়া-স্পিন বা ভিন্নমুখী গল্প ছড়িয়ে তিনি জনগণের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেন। এখন তা দৈনিক, এমনকি ঘণ্টায় ঘণ্টায়। এক ধরনের ‘নিয়ন্ত্রিত উন্মাদনা’ তৈরি করে জনগণকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতি শুধু ইসরাইলে নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও দেখা যাচ্ছে- ডনাল্ড ট্রাম্পও একই কৌশলে গোটা বিশ্বকে বিভ্রান্ত করছেন। ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু- দু’জনই নিজস্ব বিচার এড়াতে জনগণকে পুঁজি করছেন। নেতানিয়াহুর ব্যর্থতা শুধু যুদ্ধ পরিচালনায় নয়, তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোও ইসরাইলকে এক গভীর খাদে ঠেলে দিয়েছে। হামাসের অর্থায়নে পরোক্ষ মদত দেয়া, হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডার গড়ে তোলার সুযোগ দেয়া, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সময়মতো থামাতে না পারা- এসব কেবল ভুল নয়, অপরাধও। তিনি জাতিসংঘে ছবি তুলে দেখিয়েছেন ইরানের ‘বোমা ঘড়ি’, অথচ আজ ইরান একেবারে পারমাণবিক অস্ত্রের দোরগোড়ায়। আর ইসরাইল? বোমা মেরে শিশু হত্যা করছে গাজায়, বিশ্বজুড়ে পরিণত হচ্ছে এক ঘৃণিত, পরিত্যক্ত রাষ্ট্রে। গাজা যুদ্ধ অনেক আগেই থামানো যেত। মিশর তখন রাজি ছিল এক আরব শান্তিরক্ষা বাহিনী দিয়ে হামাসের বিকল্প প্রশাসন গঠনে। তখন জীবিত বন্দী ছিল ২৪ জন। আজ জীবিত মাত্র ২০। কিন্তু নেতানিয়াহু থামাননি। তার ভাষায়, সার্বিক বিজয় প্রয়োজন। কারণ এতে তার ব্যর্থতা ঢাকা পড়ে।

ফলে, আইডিএফ ফের গাজায় গিয়েছে, সবকিছু বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে, আর ইসরাইলকে বানানো হচ্ছে শিশু হত্যাকারী রাষ্ট্র। ইউরোপ, যারা এতদিন পাশে ছিল, তারা এখন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে- যা বাস্তব অর্থেই ইসরাইলের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

লেখক দৃঢ়ভাবে বলেন, নেতানিয়াহুর আসল লক্ষ্য তার বিচার বাতিল করা। তিনি যেন নিজের মনে বলছেন, তোমরা যদি আমায় জেলে পাঠাতে চাও, তাহলে আমি একা যাব না। গোটা দেশকে ডুবিয়ে নিয়ে যাব। এই নীতি থেকেই তিনি গাজার কাদায় ইসরাইলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন- শুধু প্রতিশোধের জন্য।

সব শেষ হলে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক একঘরে হওয়া, অভ্যন্তরীণ বিভাজন- সবকিছুর পর, নেতানিয়াহু পালিয়ে যাবেন মায়ামিতে। তার ছেলে, এক তথাকথিত ‘জায়োনিস্ট দেশপ্রেমিক’, আগেই সেখানে থাকার জায়গা ঠিক করে রেখেছে। নেতানিয়াহু এবং তার স্ত্রী সারা তখন দূর থেকে আগুন দেখবেন, হাসবেন- যেমন সারা নেতানিয়াহু ২৩ বছর আগেই বলেছিলেন- ‘আমরা বিদেশে চলে যাব, দেশটা পুড়তে পারে।’

(লেখক সাংবাদিক, কলামিস্ট, অর্থনীতির বিশ্লেষক। হারেৎজ পত্রিকার অর্থনৈতিক সম্পাদক ও বিশ্লেষক হিসেবে কর্মরত। তার লেখাটি দৈনিক হারেৎজ থেকে অনুবাদ)

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram