শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে কুমিল্লায়। এই পরিস্থিতিতে নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে মানবিক সংগঠন ‘বিবেক’। নগরবাসীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা শুরু করেছে ২৭টি ওয়ার্ডজুড়ে মশা নিধন কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড পাথুরিয়াপাড়ায় এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক এমপি হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন।
উদ্বোধনী আয়োজনে হাজী ইয়াছিন ও বিবেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু নিজ হাতে স্প্রে ছিটিয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন। তারা এলাকার বিভিন্ন ড্রেন, জলাবদ্ধ স্থান ও ঝোপঝাড়ে স্প্রে করেন মশা নিধনের রাসায়নিক।
এ সময় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে হাজী ইয়াছিন বলেন, “সংকটের সময় মানুষের পাশে থাকে বিবেক। করোনাকালে যখন সন্তান বাবার লাশ স্পর্শ করত না, স্ত্রী স্বামীর পাশে দাঁড়াত না, তখন এই সংগঠনই অসুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ডেঙ্গুর মতো ভয়াবহ বিপদের সময়ও বিবেক দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আজ দেশের বড় বড় শহরেই ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। অথচ নাগরিক সুরক্ষায় যাদের করণীয় ছিল, সেই সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে তা নিয়ে জনগণেরই প্রশ্ন রয়েছে। আমরা হতাশ, তবে থেমে থাকিনি। বিবেক এবারও প্রমাণ করছে, মানুষের জন্যই তারা কাজ করে, সমাজের কল্যাণে তারা নিবেদিত।”
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিবেকের চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপু। তিনি জানান, “আমরা আজ থেকে কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রথম দিনে ৩টি ওয়ার্ডে স্প্রে করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে ৪টি করে ফগার মেশিন। ফলে প্রতিদিন ৪টি ওয়ার্ডে চালানো হবে মোট ১৬টি মেশিন। এসব ফগার মেশিন তৈরি হয়েছে দেশীয় প্রযুক্তিতে, তবে ব্যবহৃত রাসায়নিক বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। কর্মসূচির ব্যয়ভার বিবেক সংগঠনের সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।”
সিটি কর্পোরেশনের মশা নিধন কর্মসূচি প্রসঙ্গে ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, “পূর্ববর্তী প্রশাসন সঠিকভাবে মশা নিধনের ওষুধ ব্যবহার করেনি। সব জায়গাতেই ছিল দুর্নীতির ছাপ। লোক দেখানো কিছু স্প্রে করে দায় সেরেছে তারা।”
এদিন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিবেকের সদস্যরা ছাড়াও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সংগঠনের এই জনস্বার্থমূলক উদ্যোগ ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি এমন নাগরিক সচেতনতাই পারে সংকট মোকাবেলায় সহায়ক হতে।