ঢাকা
২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৯:৪৪
logo
প্রকাশিত : জুন ২৬, ২০২৫

বসতঘর থেকে বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে জট খুলছে না

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিজ বসতঘর থেকে এক বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম ফয়েজ আহম্মদ (৮৫)। তিনি উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বদ্ধ গেড়ামারা গ্রামের মৃত শেখ আহম্মদের ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বুধবার রাতের কোন একসময় তাকে নিজ বসতঘরে হাত-পা বেঁধে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। তার মৃত্যু নিয়ে জট খুলছে না। ঠিক কি কারণে তিনি খুন হয়েছেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। তবে পুলিশ ধারনা করছেন পারিবারিক কারণে এই হত্যাকান্ড হতে পারে।

পরিবারের লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চার বিয়ে করেন বৃদ্ধ ফয়েজ আহম্মদ। তার অনেক সহায় সম্পদ রয়েছে। গত বছর তিনি হজ্বও করেন। তিনি কয়লার মুখ বিজিবি ক্যাম্পের পাশে চতুর্থ স্ত্রী ফিরোজা বেগমকে নিয়ে বসবাস করেন। তার প্রথম সংসারে ৫ মেয়ে ২ ছেলে, দ্বিতীয় সংসারে ১ ছেলে; তৃতীয় সংসার ৬ মাসও টেকেনি। প্রায় ৭ বছর পূর্বে তিনি চতুর্থ বিয়ে করেন, ওই সংসারে কোন সন্তান ছিল না। তার ৪ সংসারে ৮ ছেলে মেয়ে রয়েছে। তারা সবাই আলাদা আলাদা থাকেন। প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী ইতিপূর্বে মারা গেছেন।

ঘটনার দিন রাতে তিনি সবার ছোট স্ত্রী ফিরোজা বেগমকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ছিলেন। ফিরোজা ওই এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ধাত্রীর কাজ করেন। বুধবার রাতে স্বামীকে বসতঘরে একা রেখে তিনি ও তার ছোট বোন ছেমনা বেগমসহ বাচ্চা প্রসব করানোর বাড়ির অদূরে খদিজার বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ভোরে তারা বাড়ি ফিরে স্বামীর হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। পরে বিষয়টি জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ সকালে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মিরসরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নোমান আহমেদ ও জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম।

নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, ‘পাশের বাড়িতে এক মহিলার বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য রাত ১২ টার দিকে আমি এবং আমার বোন ছেমনা বেগম গিয়েছিলাম। ফজরের আজান দিলে বাড়িতে এসে দেখি আমার স্বামী রক্তাক্ত হাত-পা বাঁধা অবস্থায় খাটে পড়ে আছে। এরপর আমি বাড়ির পাশের বিজিবি ক্যাম্পে বিষয়টি জানাই এবং আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনি। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। পরে দেখি তিনি আর পৃথিবীতে নেই।’

‎নিহতের প্রথম স্ত্রীর সন্তান শাহ আলম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে আলমগীর হোসেন জানান, গত দেড় মাস যাবত আমার বাবার চতুর্থ স্ত্রী ফিরোজা বেগম ও তার বোন ছেমনা বেগম এই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। বুধবার রাতে তারা বাড়িতে না থাকায় সেই সুবাধে বসতঘরে ঢুকে কে বা কারা আমার বাবাকে নৃশংসভাবে মেরে ফেলে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে মনে হয়েছে। তবে কে বা কারা কি কারণে এই হত্যাকান্ড করেছে তা আমরা ধারণা করতে পারছি না। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো এই হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।’

নিহত ফয়েজ আহম্মদের মেয়ে প্রথম সংসারের তৃতীয় মেয়ে জাহেদা বেগম ও একই সংসারের চতুর্থ মেয়ে রেহানা আক্তার জানান, সর্বশেষ কোরবানীর মাংস নিয়ে আমার আব্বা আমাদের বাড়িতে যায়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে আব্বার মৃত্যু সংবাদ শুনে ছুটি আসি। তবে কি কারণে এই হত্যাকান্ড হয়েছে আমরা বুঝতে পারছিনা।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, ‘ঘরে কেউ না থাকায় একা পেয়ে বৃদ্ধ ফয়েজ আহম্মদকে হত্যা করা হয়। ভিকটিমের মাথায় ও মুখে কোপের চিহ্ন রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের বসতঘরের খাট থেকে হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তদন্ত করে ঘটনার বিস্তারিত বলতে পারব। তবে প্রাথমিকভাবে এটি পারিবারিক হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram