নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক মেয়র প্রাইমারিতে জোহরান মামদানির নাটকীয় জয় প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের জন্য এক বিশাল খবর। তিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে পরাজিত করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।
৩৩ বছর বয়সী মামদানি তার প্রচারে নিজেকে একজন আপোসহীন প্রগতিশীল হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। তিনি এমন এক সময়ে জিতলেন, যখন অনেকেই ভাবছিলেন যে তার মতো একজন গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক সুইং ভোটারদের কাছে গ্রহণীয় নাও হতে পারেন। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বিষয়ে তার কঠোর অবস্থানও আলোচনায় ছিল।
এই জয় শুধু মামদানির ব্যক্তিগত সাফল্য নয়। লিস স্মিথের মতো অভিজ্ঞ ডেমোক্রেটিক অপারেটররা মনে করেন, ভোটাররা এখন পুরোনো আর অনুপ্রেরণাহীন প্রার্থীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। স্মিথের মতে, অ্যান্ড্রু কুওমো জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের খারাপ দিকগুলো একাই বহন করছিলেন– একদিকে তিনি ট্রাম্পের মতো অসম্মানজনকভাবে পদত্যাগ করেছিলেন, অন্যদিকে বাইডেনের মতো বুড়ো ও নতুন ধারণাহীন ছিলেন।
মামদানি তার বিজয় ভাষণে বলেন, তার এই জয় শুধু নিউইয়র্কের জন্য নয়, সারা দেশের জন্য এক বার্তা। তিনি চান তার শহর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্যাসিবাদকে রুখতে এবং কর্মজীবী মানুষের জন্য লড়তে একটি মডেল হোক।
মায়া রুপার্টের মতো ডেমোক্রেটিক কৌশল নির্ধারকরা মনে করেন, মামদানির এই জয় বামপন্থীদের দেখাচ্ছে যে কীভাবে আপোসহীনভাবে প্রচারণা চালিয়ে জয়ী হওয়া যায়। তিনি দেখিয়েছেন, সামাজিক ও জাতিগত ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলো অজনপ্রিয় নয় বরং এগুলোকে সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেলে জেতা সম্ভব।
তবে দলের সবাই মামদানির এই জয়ে খুশি নন। নিউইয়র্কের দুই কংগ্রেস সদস্য লরা গিলিন ও টম সুওজি মামদানিকে খুব বেশি চরমপন্থী বলে সমালোচনা করেছেন।
মামদানি তার প্রচারে অর্থনীতির ওপর জোর দিয়েছিলেন। তার ওয়েবসাইটে বলা আছে, তিনি কর্মজীবী নিউইয়র্কবাসীদের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর জন্য লড়ছেন। বিনামূল্যে সিটি বাস, ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, সাশ্রয়ী আবাসন, শহর-মালিকানাধীন মুদির দোকান এবং বিনামূল্যে শিশু যত্নের মতো প্রস্তাবগুলো ছিল তার মূল প্রতিশ্রুতি। এই সবকিছুর খরচ মেটানোর কথা ছিল ধনী এবং কর্পোরেশনগুলোর ওপর কর বাড়িয়ে।
অনেক ডেমোক্র্যাট মনে করেন, মামদানির এই অর্থনৈতিক বার্তাটি তার জয়ের অন্যতম কারণ। হাউস ডেমোক্রেটিক লিডার হাকিম জেফ্রিজও মামদানির অর্থনৈতিক বার্তার প্রশংসা করেছেন। মামদানি সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত আর্থিক সমস্যাগুলোর ওপর জোর দিয়েছিলেন, যা ভোটারদের কাছে সরাসরি আবেদন তৈরি করেছিল।
সূত্র: এনবিসি