ঢাকা
১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ২:৩০
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ১১, ২০২৫

বজ্র নিরোধক দণ্ড কাজে আসছে না

বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে হাওরের ছয় উপজেলায় ২৪টি বজ্র নিরোধক ধাতব দণ্ড (লাইটনিং অ্যারেস্টার) বজ্রপাত নিরোধে কোনো ভূমিকা রাখছে না। যেসব স্থানে স্থাপন করা হয়েছে, তা বরাবরই বজ্রপাতমুক্ত এলাকা। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থাপন না করায় তাই এর সুফল মিলছে না। পাশাপাশি দণ্ড কাজ করছে কি না তা নিয়ে সন্দিহান সরকারের লোকজনসহ স্থানীয়রা।

গত মে মাসে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পিআইও অফিসের পিয়নকে নিয়ে স্থাপনকারী কম্পানি জানিয়েছে, দণ্ড সচল আছে। তবে তারা কোন প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ওই পরীক্ষার সময় জানানো হয়, স্থাপিত এলাকায় কোনো বজ্রপাত হয়নি। হাওরের পরিবেশবিদরা বলেছেন, দণ্ডগুলোতে সেন্সর থাকার কথা থাকলেও তা কাজ করছে কি না সেই রেকর্ড পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।

সুনামগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় চারটি, তাহিরপুর উপজেলায় তিনটি, বিশ্বম্ভরপুরে তিনটি, জামালগঞ্জে তিনটি, ধর্মপাশায় তিনটি এবং শাল্লায় দুটি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া আরো ছয়টি দণ্ড স্থাপন করে এই কম্পানি। সরকারি হিসাবে ২০২২ সালের ২৫ থেকে ২৯ জুনের মধ্যে এগুলো দুর্গম এলাকার বদলে গাছপালা আছে এমন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। তবে কাগজে-কলমে ২০২২ সালের জুন মাসে স্থাপন করার কথা বলা হলেও ডিসেম্বরের দিকে স্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ২০২২ সালে ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা জেলার ছয় উপজেলায় প্রায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বজ্র নিরোধক কিছু দণ্ড স্থাপন করে। ৪০ ফুট উচ্চতার এই দণ্ডগুলো চারপাশে মাত্র ১১০ মিটার এলাকায় বজ্রপাত নিরোধ করতে পারে। তবে এগুলো স্থাপনে ত্রুটি এবং ভুল জায়গায় স্থাপনের কারণে কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ আছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্রিয়েটিভ সোলার অ্যান্ড টেকনোলজি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপনের কাজ দেওয়া হয়। প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আবহাওয়ার আর্দ্রতা, মরিচা, মাটির পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে দণ্ডের রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি থাকলেও এটা কাউকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।

দণ্ডের গ্রাউন্ড রড বা গ্রাউন্ডিং সিস্টেম প্রতিবছর একাধিকবার পরিমাপ করার নির্দেশনা থাকলেও সেটাও মানা হয়নি।
হাওর, নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান রাসেল বলেন, হাওর সারা বিশ্বের বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা হিসেবে নাসা ২০১৭ সালে এক গবেষণায় জানিয়েছে। এখানে প্রতিবছরই বজ্রপাতে প্রাণহানি ঘটে। হাতে গোনা যে কয়েকটি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন হয়েছে, তার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে।

সুনামগঞ্জ পরিবেশ আন্দোলনের নেতা সইফুল আলম সদরুল বলেন, এগুলো যেহেতু ধাতব যন্ত্র, তাই কাজ করছে কি না তার সেন্সর রেকর্ড থাকা উচিত। না হলে এটি কাজ করছে কি না বোঝার কোনো উপায় নেই।

দণ্ড স্থাপনকারী ক্রিয়েটিভ সোলার অ্যান্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শামীমা নাসরিন বলেন, দণ্ডগুলো টার্কির। তবে কোন কম্পানি তৈরি করেছে এবং এতে বজ্রপাত নিরোধের কী কী উপকরণ আছে, তা বলতে পারেননি তিনি। এগুলো এক বছরের ওয়ারেন্টি দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘এগুলো কাজ করছে কি না তা বৈজ্ঞানিকভাবে জানার বিশেষ কোনো উপায়ও নেই।’

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, ‘গত মে মাসে স্থাপনকারী কম্পানি আমাদের সদর উপজেলার দণ্ডগুলো পরীক্ষা করেছে। তবে স্থাপিত এলাকায় বজ্রপাত পরিমাপের বিষয়ে তারা আমাদের কিছু বলেনি। আমাদের অফিস সহায়ককে নিয়ে তারা পরীক্ষা করে জানিয়েছে, এগুলো সচল আছে।’

তাহিরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহেদী হাসান মানিক বলেন, ‘তাহিরপুরে যে তিনটি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো সচল না অচল আমরা কিছু জানি না।’

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram