আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার- যা শিশুদের ‘নোবেল’ হিসেবে পরিচিত। এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন কিশোরগঞ্জের মাদরাসাছাত্র মাহবুব আল হাসান (১৭)। পরিবেশ, জলবায়ু কার্যক্রম, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম ভিত্তিক কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা শিশুদের এই পুরস্কারে মনোনীত করে।
মাহবুব কিশোরগঞ্জ আহমাদ জুবাইদা দাখিল মাদরাসা থেকে ২০২২ সালে দাখিল এবং হয়বতনগর এ. ইউ. কামিল মাদরাসা থেকে ২০২৪ সালে আলিম পাস করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি শোলাকিয়ার আব্দুল্লাহ আল হাছান ও দিলোয়ারা খাতুন দম্পতির ছেলে।
গত তিন বছর ধরে মাহবুব নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিজের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘The Change Bangladesh’-কে, যার লক্ষ্য শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা ও জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধি। তার উদ্যোগে শিশুদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা ছড়ানো, বৃক্ষরোপণ এবং গাছের চারা, পেনসিল, খাতা ও কলম বিতরণের মতো কার্যক্রম নিয়মিত চলছে। হাওর অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার অধিকার রক্ষায়ও তিনি কাজ করছেন নিরলসভাবে।
এছাড়া অসুস্থ শিশুদের রক্তের জোগান নিশ্চিত করতে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘ব্লাড খুঁজি’ নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা জরুরি মুহূর্তে রক্তদাতাদের সঙ্গে রোগীর পরিবারকে যুক্ত করে দেয়।
নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মাহবুব আল হাসান বলেন, ‘শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ, আর সেই ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আমি সবসময় বিশ্বাস করি—একটি সচেতন প্রজন্মই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। তাই শিশুদের নিয়ে কাজ করা শুধু একটি দায়িত্ব নয়, এটি আমার জীবনের লক্ষ্য ও প্রতিজ্ঞা। এই আন্তর্জাতিক মনোনয়ন আমার কাজের প্রতি আরও দায়বদ্ধতা বাড়াবে, আমাকে অনুপ্রাণিত করবে আরও বড় পরিসরে শিশুদের জন্য কাজ করতে। আমি চাই, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত হাওর থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি শিশুই যেন সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা পায়।’