হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপে দুর্বৃত্তের দ্বারা হত্যার শিকার আমেনা বেগমের গলাকাটা মরদেহ ময়নাতদন্তে নিতে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার দরুন ট্রলার না ছাড়াই পুলিশ লাশ নিয়ে সকাল থেকে নিঝুম দ্বীপ মোক্তারিয়া নৌ-ঘাটে অপেক্ষা করছে। হাতিয়া উপজেলায় লাশকাটাঘর ও পোস্টমর্টেমের ব্যবস্থা না থাকায় এভাবে প্রায়ই মরদেহ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার এবং পুলিশকে বিপাকে পড়তে হয়।
এর আগে গতরাত ৩টার দিকে আমেনা বেগমের গলাকাটা মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিঝুম দ্বীপ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (এসআই) আব্দুল মান্নান জানান, আমেনা বেগম নামের ওই নারীকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে রাত ৩ টার দিকে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তথা ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় নৌঘাট থেকে ট্রলার না ছাড়াই তারা লাশ নিয়ে মুক্তারিয়া ঘাটে অপেক্ষা করছে বলে জানান এসআই মান্নান।
নিহত আমেনা বেগম নিঝুম দ্বীপ ৩নং ওয়ার্ড শতফুল গ্রামের এমরান মাঝির স্ত্রী। ৬ সন্তানের জননী আমেনা বেগমের চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, আর দুই ছেলে জেলা শহর মাইজদীতে থেকে পড়াশোনা করছে। ফলে একা বাড়িতে শুধু স্বামী-স্ত্রী তারা দুজনই থাকতেন বলে জানা গেছে।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লাভলী বেগম জানান, বুধবার (২৮ মে) রাতে তিনি জানতে পান- নিহতের স্বামী এমরান মাঝি সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে স্ত্রীকে নামাজ পড়া অবস্থায় দেখেন। এরপর রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন বসত ঘরের দরজা খোলা, ঘরে স্ত্রী নেই। ঘরে রক্ত পড়ে আছে। তা দেখে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রক্তাক্ত মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে তারা। প্যানেল চেয়ারম্যান আরো জানান, ব্যাপক ঝড়বৃষ্টির পরও খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে ওই নারীর বীভৎস মরদেহ দেখতে পান। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কিংবা আশপাশের কারো সাথে ঝগড়াফ্যাসাদ ছিলো না বলে জানান তিনি।
এ রিপোর্ট লেখা শেষে নিঝুম দ্বীপ মোক্তারিয়া ঘাটে খোঁজ নিলে আকবর হোসেন নামের একজনে জানান, সময় অনেক হয়ে যাওয়ায় বাতাস এবং বৃষ্টির মধ্যেও ট্রলারে করে লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম আজমল হুদা জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।