বড়লেখা প্রতিনিধি: বড়লেখা উপজেলার পৃথক দুইটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া বিভিন্ন মূল্যবান ধাতব মালামাল ও চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম। শুক্রবার রাতে পৃথকস্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে পুলিশ তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- উপজেলার দোহালিয়া গ্রামের মৃত রবই মিয়ার ছেলে রুহেল আহমদ (৩০), মুছেলগুল গ্রামের তাজিম উদ্দিনের ছেলে আবু তায়েব আহমদ সাজু (২৮), বর্ণি নোয়াগাও এলাকার রফিক উদ্দিনের ছেলে নুর হোসেন (৪০), কুমারশাইল এলাকার আছার উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেন (৩১), মাধবগুল এলাকার মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে শাহ আলী (৪২), মৌলভীবাজার মিরপুর দক্ষিণ এলাকার দরবেশ আলীর ছেলে আলাল মিয়া (৩৮)।
জানা গেছে, ১২ জুন রাত ৯টা থেকে ১৩ জুন ভোর ৫টার মধ্যে বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ভব ঠাকুরের আখড়ায় চুরির ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত চোরেরা মন্দিরের কড়া ভেঙে প্রবেশ করে বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৩ জুন মন্দির কমিটির সভাপতি মঞ্জু লাল দে থানায় মামলা করেন। এরপর ২৬ জুন রাত ১০টা থেকে ২৭ জুন সকাল ৭টার মধ্যে একই উপজেলার দক্ষিনভাগ সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত চোরেরা মন্দিরের বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২৭ জুন মন্দির কমিটির লোকজন থানায় মামলা করেন।
এই দুইটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য বড়লেখা থানার ওসি (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস, এসআই নিউটন দত্ত, এএসআই মফিজুল ইসলামসহ পুলিশ বিশেষ অভিযানে নামে। বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বুধবার (২৫ জুন) রাত সাড়ে আটটায় দক্ষিণভাগ বাজারের পাশের রেললাইন এলাকা থেকে প্রথমে রুহেল আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘটনার সাথে জড়িত আবু তায়েব আহমদ সাজু, নুর হোসেন, জাকির হোসেন, আলাল মিয়া, শাহ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাধবগুল এলাকার সুহেল মিয়ার মার্কেটে শাহ আলীর ভাঙ্গারী দোকান থেকে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়। নুর হোসনের বসতবাড়ি থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত ১টি কাটার, ২টি হেসকো ব্লেড, ১টি হেমার, ৩টি ছেলাই রেঞ্জ, ৩টি হাতুড়ি, ২টি রডের টুকরা ও ১টি লাল রঙের জগ জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে ১১টি পিতলের ঘট (ছোট বড়), ২টি পুষ্প থালি, ১টি পিতলের প্রদীপ, ২ সেট চিপ কোষা, ১টি বড় কাসার ঘন্টা, ৫টি কাসার বাটি, ২টি কাসার থালা, ১টি পিতলের কলসি, ১টি কাসার ঘন্টা এবং ৬টি কাসার থালা।
ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা শনিবার বিকেলে বলেন, দুইটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী ও চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে।