যশোর প্রতিনিধি: যশোর আইটি ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় সফল ফ্রিল্যান্সার এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে সংবর্ধনা ও সার্টিফিকেট প্রদানসহ প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাকরির প্রচলিত ক্যারিয়ারের জন্য অপেক্ষা না করে দেশের তরুণ-তরুণীরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে নিচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশে ক্যারিয়ার হিসেবে একমাত্র স্মার্ট পেশা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। লাভজনক পেশা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং, একটি ল্যাপটপ আর ইন্টারনেটকে পুঁজি করে দুর্গম গ্রামে বসেও লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং পেশায় বেশি ঝুঁকছে।
যশোরের তরুণদের বেকারত্ব দূর করার স্বপ্ন দেখাচ্ছে যশোর আইটি। দেশের চাকরির বাজারে ঘুরে হতাশ না হয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে একধাপ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং করে। যশোর আইটি ইনস্টিটিউট দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম একটি আইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি বেকার সমস্যা নিরসনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন প্রফেশনাল বিষয়ে ট্রেনিং নিয়ে অনেক তরুণ তরুণী তাদের স্বপ্নের ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। ফ্রিল্যান্সিং, চাকরি এবং ব্যবসা সেক্টরে এবং প্রতিনিয়ত তারা দক্ষতার সাথে রেখে যাচ্ছেন সফলতার স্বাক্ষর। সেই সাথে তারা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন দেশের অর্থনীতিতে। তেমনি কিছু সফল ফ্রিল্যান্সার এবং শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা ঘটেছে যশোর আইটি ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সফল ফ্রিল্যান্সার আল আমিন হোসেন বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে মূলত বিদেশি কোম্পানি ও ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে ইংরেজি দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে ধৈর্যশীল হতে হবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে এবং ভাষাগত দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকা উচিত। এতে ফ্রিল্যান্সিং করা সহজ হবে এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্সট্রাক্টর হাসনাত আবির বলেন, ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ। বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং খাতের ব্যাপক প্রসারের জন্য এটি একটি সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ। এই তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে, যা তাদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।
যশোর আইটি ইনস্টিটিউটের চিফ এডমিন অফিসার মোঃ সায়েম আলী বলেন, দেশে কর্মক্ষম মানুষের তুলনায় সরকারি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। কর্মক্ষম প্রতিটি মানুষ দেশের জন্য মূল্যবান মানবসম্পদ। শিক্ষিত বেকার মানবসম্পদকে যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে এ ক্ষেত্রে এই বেকার যুবসমাজকে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে এমন একটি প্রশিক্ষিত যুবসমাজ গড়তে চেষ্টা করছি, কিন্তু এ কাজ আমাদের একার পক্ষে করা খুবই কঠিন। সরকার যদি আমাদের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দেয়, অবশ্যই আমরা ভালো কিছু করতে পারব। তিনি আরও বলেন, অবশ্যই নারীদের আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে হবে। এ ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং নারীদের জন্য এক বিশাল সুযোগ, ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোর আইটি ইনস্টিটিউটের চিফ এডমিন অফিসার মোঃ সায়েম আলী সহ অত্র প্রতিষ্ঠানের গ্রাফিক ডিজাইনের ইন্সট্রাক্টর হাসিব ইমতিয়াজ, ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্সট্রাক্টর হাসনাত আবির, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইন্সট্রাক্টর মোঃ লিমন হোসেন, ভিডিও এডিটিং ইন্সট্রাক্টর ড্যানিয়েল বিশ্বাস এবং অফিস এপ্লিকেশন ইন্সট্রাক্টর রাজিব কুমার দত্ত।
এসময় যশোর আইটি ইনস্টিটিউট থেকে কোর্স সম্পন্ন করে সফলতা অর্জন করেছেন এমন ৮ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং বিশেষ উপহার গ্রহণ করেন আল আমিন হোসেন- ডিজিটাল মার্কেটিং (কাজ করছেন আপওয়ার্ক মারকেটপ্লেসে), মনিরুজ্জামান- গ্রাফিক ডিজাইন (কাজ করছেন ফ্রিল্যান্সার.কম মারকেটপ্লেসে), তানজিলা খাতুন- গ্রাফিক ডিজাইন (কাজ করছেন ফ্রিল্যান্সার.কম মারকেটপ্লেসে), অয়ন কুমারসাহা- ভিডিও এডিটিং (কাজ করছেন আপওয়ার্ক মারকেটপ্লেসে), রাজিব হোসেন- ডিজিটাল মার্কেটিং (কাজ করছেন এফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরে), সোহানুর রহমান- ডিজিটাল মার্কেটিং (কাজ করছেন ফাইভার মারকেটপ্লেসে), স্বাধীন বিশ্বাস- ডিজিটাল মার্কেটিং (কাজ করছেন ফাইভার মারকেটপ্লেসে), ইসরাক ইসলাম সানভি- ভিডিও এডিটিং (রিমোট জব করছেন একটি স্বনামধন্য পাকিস্তানি কোম্পানিতে), মোঃ সাইফুল ইসলাম (চাকরি করছেন বেসিক কম্পিউটার ট্রেনার হিসেবে যশোর টিটিসি তে)।