বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছীতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের দুটি কক্ষে ফ্যান চালিয়ে ধান শুকানো অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তার ভাই একাব্বর রহমানের বিরুদ্ধে।
গত ২০শে মে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার মিঠাপুর ইউপির খোকশাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের দুটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। সরেজমিন গিয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষে ধান শুকানোর এই চিত্র দেখা যায়।
সম্প্রতি খোকশাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন তৈরির পর পুরাতন ভবন বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা নিজেদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছে বিদ্যালয়ের কক্ষগুলো। ঐ ভবনের শ্রেণিকক্ষের চেয়ার-টেবিল সরিয়ে ফ্যান চালু করে ধান শুকানো হচ্ছে। প্রথমে দেখে যে কারও মনে হবে এ যেন স্কুলের কক্ষ নয়-এটি একটি চাতাল। কিন্তু বাস্তবে এটি কোন চাতাল নয় বরং এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুরানো ভবনের কক্ষের দৃশ্য ।
স্থানীয় সুমন, ইউসুফসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেলের কাছ থেকে চাবি নিয়ে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের কক্ষে তার ভাই রহিমপুর স্কুলের শিক্ষক একাব্বর রহমানসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ধান শুকাচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিজেও বিদ্যালয়ের এই ভবনের কক্ষে ধান শুকানো সহ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। কয়েকদিন থেকে এ কাজ করছেন তিনি।
এছাড়াও বিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, এভাবে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ অপচয় করে ফ্যান চালিয়ে ধান শুকানো দুঃখজনক। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এই পুরাতন ভবনের কক্ষে ফ্যান চালিয়ে সরকারি অর্থের অপচয় করছেন। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত একাব্বর ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও ধান শুকানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। একাব্বর পার্শ্ববর্তী এলাকার রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন এমনটাই জানান এলাকাবাসী।
খোকশাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ধান শুকানোর জন্য আমার স্ত্রীর কাছ থেকে একজন চাবি নিয়ে গিয়ে এই কাজ করেছে। আমি এই বিষয়টি জানার পর স্ত্রীকে একটু বকাঝকাও করেছি। ফ্যান চালিয়ে ধান শুকানোর বিষয়ে জানতে চাইলে কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ঘটনার বিষয়টি খোজঁ খবর নিয়ে সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন বদলগাছী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম।