ঢাকা
৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১২:৫৩
logo
প্রকাশিত : এপ্রিল ২৯, ২০২৫

২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৪০০ শতাংশ

বাড়িওয়ালাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়ন্ত্রণহীন ভাড়া বৃদ্ধির ফলে প্রাণ ওষ্ঠাগত রাজধানীবাসীর। বাসার মান বা সুবিধা না বাড়লেও প্রতি বছরই বাড়িভাড়া বাড়াচ্ছেন বাড়িওয়ালারা। ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) তথ্য বলছে, গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ।

রাজধানীর বনশ্রীর ডি ব্লকে স্ত্রী, এক কন্যা আর দুই ছোট ভাইকে নিয়ে দুই কক্ষের ছোট একটি ফ্ল্যাটে থাকেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত মো. আজহার শাহিন।

ডাইনিং স্পেস ছোট হলেও কোনো রকমে মানিয়ে নিয়ে বসবাস করছেন। ফ্ল্যাটে একমাত্র কন্যা রুবাইয়া ইসলামের অনেকটাই বন্দি সময় কাটে। আলো-হাওয়ার পরশ মেলে একচিলতে বারান্দায় গেলে। তবে মশার কারণে সেখানেও স্বস্তি নেই।

মশার উপদ্রবের কারণে ফ্ল্যাটের জানালা-দরজা বন্ধই রাখতে হয়। বিদ্যুতের খুব একটা সমস্যা না হলেও পানি নিয়ে সংকট আর কাটে না। রান্নার সময় গ্যাস সরবরাহে প্রায় সময়ই সমস্যা দেখা দেয়। তবে সমস্যা যা-ই থাক না কেন মাস শেষে ১০ তারিখের মধ্যেই ফ্ল্যাটের মালিককে ভাড়া হিসেবে দিতে হয় ১৭ হাজার টাকা।

ওই সময়ের মধ্যে অফিস থেকে বেতন না পেলেও ফ্ল্যাটের ভাড়া পরিশোধের সময় বাড়ে না। সময়মতো ভাড়া দিতে না পারলে শুনতে হয় নানা কথা।

আজহার শাহিনের বেতন মাসে ৩০ হাজার টাকা। বেতনের তিন ভাগের দুই ভাগ বাসাভাড়া দিয়ে কোনোমতে সংসার টানতে হাঁপিয়ে ওঠা এই ব্যক্তি বলেন, ‘বেতন পাওয়ার আগেই বাসাভাড়া দিয়ে দেওয়ার হিসাব করা লাগে। যা বেতন পাই তা দিয়ে মাস চালানো মুশকিল।

বেতন পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই টানাটানি লেগে যায়। বাচ্চাটার জন্য আলাদা করে কিছু আনা তো দূরের কথা, সংসারের খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি। এসব কথা কাকে বলব? বলার তো জায়গা নেই।’

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, এমন অবস্থা শুধু একজন আজহার শাহিনের নয়। ঢাকা শহরে বাসস্থানের সংকট দীর্ঘদিনের, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সংকট যেন নতুন মাত্রা পেয়েছে। ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ১৫ বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬২৮ শতাংশ। গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়াসংক্রান্ত জরিপে সংগঠনটি জানিয়েছিল, এ সময় বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ। একই সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ে নিত্যপণ্যের দামের তুলনায় বাড়িভাড়া বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ।

সংগঠনটির অন্য এক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া প্রায় ৫০ শতাংশ, ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ ব্যয় করে বাড়িভাড়া পরিশোধে।

পূর্ব রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘মাত্র তিন বছরের মধ্যে আমার বাসার ভাড়া ১২ হাজার টাকা থেকে ১৮ হাজারে উঠে গেছে। কিন্তু বাসার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বারান্দা ভাঙা, পানির লাইন নষ্ট, তবু বাড়িওয়ালা শুনছেন না কিছুই।’

অনেকে অল্প টাকায় থাকার জন্য অনিরাপদভাবে থাকছে। ভাটারা এলাকায় গ্যারেজের মতো একটি রুমে থাকেন গার্মেন্টসকর্মী সালমা বেগম। তিনি বলেন, ‘টিনের ছাউনির একটি রুম, গরমে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তবু এখানে থাকি। কারণ অন্য কোথাও ভাড়া অনেক বেশি।’ উত্তরার একটি নির্মীয়মাণ ভবনের পাশে বসবাস করছে বেশ কয়েকটি পরিবার। এসব পরিবার কনটেইনার বাসায় থাকে। তাদের মতে, চাইলেও ভালো জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়। আট থেকে ১০ হাজার টাকায় কোনো বাসা মেলে না। আর যেখানে মেলে সেখানে পানি, গ্যাস কিছুই ঠিকঠাক মেলে না।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram