মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শুকুরেরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে প্রভাবশালীরা। এতে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো শুকুরেরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা, শুকুরেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় এবং শুকুরেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রাস্তা বন্ধের বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)সহ কয়েকটি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন অধ্যক্ষ ফজলুল হক। দীর্ঘ ৫০ বছরের প্রাচীনতম রাস্তাটি বন্ধ করায় জনমনে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মোসলেমবাজার হতে রংপুর দর্শনামুখী রাস্তার সাথে সংযুক্ত শুকুরেরহাট ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার যাতায়াতের একটি হেরিংবন রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটি উপজেলার অন্যতম শুকুরেরহাটের সাথেও সংযুক্ত। হঠাৎ করে প্রভাবশালীদের দাপটে রাস্তায় মাটি ফেলে চলাচলের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে মাসরাসাটির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ছাড়াও পাশের শুকুরেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। মাটি ফেলে রাস্তা বন্ধ করায় ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত এক মাস ধরে ভোগান্তিতে থাকলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। একদিকে রাস্তা বন্ধ অপরদিকে প্রশাসনের নিরবতায় স্থানীয়দের মাঝে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে নির্মিত হেরিংবন রাস্তাটি বন্ধ থাকায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের বিক্ষোভ করার কথা জানা গেছে।
শিক্ষার্থী মোতাসিম বিল্লাহ, সামিউল, মুরাদ, মেহেদীসহ অনেকেই জানান, আমরা ছোট থেকেই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। হঠাৎ মাটি ফেলে রাস্তা বন্ধ করায় আমাদের এক মাইল ঘুরে মাদরাসায় যেতে হচ্ছে। দকেউ কষ্ট করে হেটে পার হলেও সাথে থাকা সাইকেল কাঁধে নিয়ে পার হচ্ছেন। এটা আমাদের সাথে চরম অন্যায় হচ্ছে। ছাত্ররা আন্দোলন করে দেশে পরিবর্তন এনেছে। আমরা আন্দোলনে নামলে কাউকে মানবো না।
মাদরাসার অধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, মাদরাসাটি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই রাস্তাটি দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চলাচল করে আসছে। কিন্তু হঠাৎ আব্দুল হাকিম ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ফেলে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে। যোগাযোগ করা হলেও সে নিজের জমি দাবি করে গত এক মাস ধরে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছেন। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করছেন। বিষয়টি ইউএনও কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
অভিযুক্ত আব্দুল হাকিম জানান, জায়গাটি আমার পৈতৃক সম্পত্তি। এ জন্য আমারা মাটি ফেলেছি। বিষয়টি সমাধান হবে কিনা পরে দেখা যাবে। তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম লেলিন সাংবাদিকদের দাম্ভিকতা দেখিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সেক্রেটারি ছিলাম। ওইখানে আগে বড় গর্ত ছিল আওয়ামী লীগের টাকা দিয়ে ভরাট করেছি। আশেপাশের সব জায়গা আমাদের বাপদাদার। নিজের জায়গায় মাটি ফেলছি সমস্যা কি? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাস্তা বন্ধের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাস্তা বন্ধ তাতে কি। দেখা যাক এখানে কে আসে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম মন্ডল বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাস্তা বন্ধ করা অযৌত্তিক। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইউএনও স্যার ও থানা দেখবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিকাশ চন্দ্র বর্মন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলেছি।