গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাগনামারি ইউনিয়নের উজান কাশিয়ারচর এলাকার একটি ব্যস্ততম সড়কের ওপর ঘর নির্মাণ করে দখলে নিয়েছেন এক ব্যক্তি। ফলে ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। লোকজন বাধা দিলেও কোনো কাজে আসেনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে তিনি দম্ভোক্তি করে বলেন, ‘আগে পারছি না, অহন আমার জায়গায় ঘর করছি বাধা দিব কেডা?’ এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র ও লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ওই এলাকার চেচুর মোড় এলাকায় রয়েছে একটি ত্রিমুখী ব্যস্ততম সড়ক। তার মধ্যে একটি সড়ক চলে গেছে সরকারিভাবে তৈরি করা আবাসন প্রকল্পের দিকে। সেখানে রয়েছে ৭১টি পরিবার। এ ছাড়া এ সড়ক দিয়ে ১০টি গ্রামের লোকজন বিশেষ করে ভাংনামারি, খোদাবক্সপুর, ভাটিপাড়া, খেলার আলগী, ভোলার আলগী, নাওভাঙ্গা, ঈশ্বরগঞ্জের তারুন্দিয়া ও কোনাপাড়ার লোকজন নিয়মিত চলাচল ছাড়াও বেশ কিছু যানবাহনও চলাচল করে। স্থানীয় লোকজন তাদের উৎপাদিত পণ্য এই সড়ক দিয়েই স্থানীয় বাজার ছাড়াও শহরের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যান।
অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সব কর্মকাণ্ড সারতে এই সড়কটি ব্যবহার করে আসছেন। বিশেষ করে জেলা শহর ময়মনসিংহে এই সড়ক দিয়ে যেতে হয়। এমতাবস্থায় কলিম উদ্দিন (৫৫) নামে একজন সড়কটির প্রবেশপথের অধিকাংশ জায়গা দখল করে একটি ঘর তৈরি করেন। ফলে এখন আর এই সড়ক লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারছে না। এ অবস্থায় বাড়ির কিনারা ঘেঁষে বা বাড়ির ভেতর দিয়ে কোনোমতে চলাচল করছেন। প্রয়োজনীয় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দখলদার ওই কলিম উদ্দিন ওই এলাকার মৃত আমির উদ্দিন মুন্সির ছেলে। তিনি ৫ আগস্টের পরপরই নিজেকে জামায়াত ঘরানার লোক বলে পরিচয় দিচ্ছেন। ওই সড়কের পাশেই তার নিজস্ব জমি থাকায় সড়কটির অধিকাংশই তিনি নিজের বলে দাবি করছেন।
জানতে চাইলে কলিম উদ্দিন বলেন, এই সড়কের বেশির ভাগই আমার জমি। আগে সরকারের লোকজন, বিশেষ করে মেম্বার-চেয়ারম্যান আমার জায়গা দিয়েই সড়ক করেছিল। পরে অনেকেই জানেন এটা সরকারি সড়ক। আসলে তা না। এখন আমার জমি আমার দখলে নিছি।
এলাকার লোকজন জানান, এই সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে প্রায় ৩০ বছর ধরে। তখন কেউ প্রশ্ন তোলেনি। এখন কলিম উদ্দিন একসময় বিএনপি ও একসময় জামায়াতের নেতা বলে পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব খাটাচ্ছেন।
গৌরীপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়ে এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।’