ঢাকা
২৬শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৩:৩৯
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৬, ২০২৫

অপারেশনে অংশ নেয়া অস্ত্রধারীরা বিডিআর সদস্য ছিলেন না, অধিকাংশই ছিলো কম উচ্চতার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: খেলাধুলার প্রশিক্ষণ নিতে বান্দরবান থেকে ঢাকার পিলখানায় এসেছিলেন সৈনিক তারিফুল ইসলাম। অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় ১৬ বছর কেটেছে কাশিমপুর কারাগারে। ২ মাসের সন্তান মোবিন ইসলাম এখন নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। হারিয়েছেন শ্বশুর-শ্বাশুরিসহ অনেক আত্মীয়স্বজন। শেষবারের মতো দেখার সৌভাগ্য হয়নি তাদের মুখ। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় পা রাখেন তারিফুল ইসলাম। এসময় তাকে জড়িয়ে ধরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশের।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ফসলান্দি গ্রামের শাহ আলম ও খোদেজা দম্পত্তির ছেলে তারিফুল ইসলাম। তারিফুল ২০০৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ১০ রাইফেল ব্যাটালিয়নে যোগ দেন। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি মির্জা লিমাকে বিয়ে করেন। ওই বছরেরই ২২ ডিসেম্বর মোবিন নামে এক পুত্র সন্তানের বাবা হন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মাসে বিডিআর বিদ্রোহের আগের দিন কর্মস্থল বান্দরবান থেকে ঢাকার পিলখানায় স্পোর্টসের প্রশিক্ষণের জন্য যান তারিফুল।

তিনি জানান, প্রশিক্ষণ চলাকালীন সকালে গুলির শব্দ পান। ভিতরে গিয়ে দেখতে পান অস্ত্রধারীদের। তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করতে বলে বিডিআর সদস্যদের। যোগ দিতে বলে অপারেশনে, হুমকি দেয়া হয় মেরে ফেলার। অস্ত্রধারী অধিকাংশই ছিলো কম উচ্চতার। আবার কেউ কেউ ছিলো অধিক উচ্চতা সম্পন্ন। তাদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিলো। তারা বিডিআর সদস্য ছিলোনা। আমরা যে অস্ত্র ব্যবহার করতাম অপারেশনে অংশ নেয়া সন্ত্রাসীদের সে ধরণের অস্ত্র ছিলো না।

তারিফুল জানান, বাইরে আলো দেখার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। মাঝে-মধ্যে আন্দোলন হতো তখন আশা জাগতো। কিন্তু স্বৈরাচার হাসিনা সরকার তা দমন করে দিলে আশা ভেস্তে যায়। ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাসিনার পতনের খবরে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন জাগে। আজ যাদের জন্য বাইরের আলো দেখা সেই ছাত্র-জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। মহান আল্লাহ তাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। পুনরায় চাকরিতে যোগদানের আশাবাদ ব্যক্ত করছেন সীমান্তের অতন্দ্র এ প্রহরী।

তারিফুলের একমাত্র সন্তান ১৬ বছর বয়সী মোবিন জানায়, আমার ২ মাস বয়স থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মিথ্যা মামলায় আব্বু কারাগারে ছিলেন। এতো বছর পর আব্বুকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরতে পেরে কি যে আনন্দ লাগছে তা ভাষায় করতে পারবো না।

স্ত্রী মির্জা লিমা বলেন, বিয়ের একবছর পরেই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিনা দোষে কারাগারে যেতে হয়েছে আমার স্বামীকে। দীর্ঘ ১৬ বছর কি যে যন্ত্রণায় কেটেছে তা বলতে পারবো না। মেয়ের জামাইয়ের শোকে শেষ পর্যন্ত আমার মা-বাবা মারাই গেলেন।

তারিফুলের বাবা শাহ আলম ও মা খোদেজা জানান, ছেলেকে যে এভাবে পাবো তা ভাবিনি। মহান আল্লাহ তাআলা ওকে (তারিফুল) বুকে ফিরিয়ে দেয়ায় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।

এদিকে তারিফুলকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন তার আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী। তাকে দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার আসল রহস্য উন্মোচন করে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবি করেন।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram