শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নের নাদপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নাদপাড়া যুবমিলন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ৩০ জন গুরুতর আহত হয়।
এ ব্যাপারে নাদপাড়া যুবমিলন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, স্কুলের এ্যাডহক কমিটি নিয়ে নাদপাড়া গ্রামের বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় রবিবার দুপুরে তিনি উপজেলা জামায়াতের আমির এস এম মতিয়ার রহমানের পক্ষে একটি কমিটি ও প্রবীণ বিএনপি কর্মী নওশের বিশ্বাসের পক্ষে আরেকটি কমিটি প্রস্তাব করেন। উভয় পক্ষের কমিটি দুটি নিয়ে শৈলকুপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যাওয়ার সময় স্কুল ক্যাম্পাসে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে তারা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে সেকেন্দার বিশ্বাস, আলিম বিশ্বাস, শাওন বিশ্বাস, বাচ্চু বিশ্বাস, ওমর ফারুক, রফিকুল ইসলাম, রবিউল বিশ্বাস, আনোয়ার হোসেন, তানভির হোসেন, মাসুদ, মেহেদী হোসেন, সোহেল, আলিম হোসেন, রবি হোসেন, শহিদুল ইসলাম, রিপন হোসেন, মনিরুদ্দিন, মনিরুল ইসলাম, রোজদার আলী, রতন বিশ্বাস, কলিমুদ্দিন, শাহীন ও রুদ্র সহ উভয় গ্রুপের ৩০ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সংঘর্ষ নিয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির এসএম মতিউর রহমান বলেন, নাদপাড়া গ্রামের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ চাচ্ছে স্কুলের এ্যাডহক কমিটিতে তিনি সভাপতি হয়ে আসেন। কিন্ত গ্রামের বিএনপি কর্মী নওশের বিশ্বাস তার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে কমিটি গঠনের চেষ্টা করে আসছিলেন। কিন্ত উভয়ে কোন সমঝোতায় পৌছাতে না পারায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিবার দুটি কমিটি প্রস্তাব করেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রস্তাবিত কমিটি জমা দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় নওশের বিশ্বাসের পক্ষ থেকে উস্কানিমূলক কথা বলায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তবে ঘটনার সময় তিনি এলাকায় উপস্থিত ছিলেন না।
এ ব্যাপারে সংঘর্ষ নিয়ে নাদপাড়া গ্রামের প্রবীণ বিএনপি কর্মী নওশের বিশ্বাস বলেন, নাদপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে উপজেলা জামায়াতের আমিরের সাথে কোন সমঝোতা না হলে রবিবার দুটি কমিটি প্রস্তাব করেন প্রধান শিক্ষক। দুপুরে তার পক্ষের প্রস্তাবিত কমিটি স্কুল থেকে নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরের জমা দিতে যাওয়ার সময় উপজেলা জামায়াতের আমিরের সমর্থকরা স্কুল ক্যাম্পাসে তাদের বাধা দেয়। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা একসাথে তাদের উপর হামলা চালায় এবং তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে।
এ ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক কর্মকর্তা সুলতান আলী বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম খান বলেন, নাদপাড়া যুবমিলন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েক ব্যক্তি আহত সহ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।