

বাংলাদেশ সহ চারটি দেশের বিরুদ্ধে লেভেল-২ ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। এসব দেশে মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই রোগের কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই। শুক্রবার ঘোষণায় বলা হয় কিউবা, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ফক্স নিউজ। এতে বলা হয়, মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সিডিসি কিছু উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে যাত্রার পরিকল্পনা করা আমেরিকানদের জন্য নতুন ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। এসব দেশে বর্তমানে এমন এক মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যার কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই। এসব এলাকায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে আমেরিকানদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, চিকুনগুনিয়ার কোনো চিকিৎসা না থাকলেও রোগটি টিকাপ্রতিরোধযোগ্য। যেসব এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে এবং সেখানে কারো ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানে ভ্রমণকারীদের টিকা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হলো জ্বর এবং জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা।
এছাড়া মাথাব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা, জয়েন্ট ফুলে যাওয়া বা র্যাশও দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত মশার কামড়ের সাধারণত তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয় এবং বেশিরভাগ মানুষ এক সপ্তাহের মধ্যে সেরে ওঠে। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর তীব্র জয়েন্ট ব্যথা থাকতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, কিছু রোগীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি ও মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। ফলে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩রা অক্টোবরের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪,৪৫,০০০ সন্দেহভাজন ও নিশ্চিত চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত করা হয়েছে এবং ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকাতেই ৭০০ জন সন্দেহভাজন চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়েছে আইইডিসিআর। ওদিকে চীনের গুয়াংডং প্রদেশে সেপ্টেম্বরের শেষে মোট ১৬,০০০ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত চিকুনগুনিয়া রোগী নিশ্চিত হয়েছে, যা দেশটির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ প্রাদুর্ভাব। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত কিউবায় ৩৪ জন নিশ্চিত রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং দেশটি প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্য কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। শ্রীলঙ্কায় ২০২৫ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ১৫০ জন নিশ্চিত চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, জুন মাসে রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ পৌঁছে।
সিডিসি আরও জানিয়েছে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ভারত, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ড ভ্রমণকারীদেরও চিকুনগুনিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে, যদিও এসব দেশে বর্তমানে বড় ধরনের প্রাদুর্ভাবের খবর নেই। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালের পর থেকে কোনো অঙ্গরাজ্য বা এলাকায় স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত চিকুনগুনিয়ার ঘটনা আর দেখা যায়নি।

