মো: ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: বোরো মৌসুমে ধান কাটা মাড়াইসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গ্রামের মানুষ। বাড়িতে ও মাঠে ধান কাটা, ধান ও খড় শুকানোর পাশাপাশি গৃহস্থালির কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত। জমি থেকে ধান কেটে মেসি গাড়িতে করে আনার সময় জমির কাদায় ফেঁসে যায় ধান ভর্তি গাড়ি। বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে বাড়িতে রেখে জমিতে ফেঁসে যাওয়া গাড়িটি দেখতে যান মা মোর্শেদা। জমি থেকে বাড়িতে এসে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। ঘরের পেছনে জানালা দিয়ে দেখতে পান সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ঝুলে থাকতে বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে মুনতাহা আক্তার (২১) কে। ঘরে গ্রীলের দরজা না খুলতে পারায় ঘরের পেছনে জানালা ভেঙ্গে বাক প্রতিবন্ধী মুনতাহাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে স্থানীয়রা। ঘরের জানালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করলেও ততক্ষণে মারা যায় মুনতাহা। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌরশহরের ১নং ওয়ার্ডের চুরকুই (চরকাই) গ্রামে।
সোমবার (২৬ মে) বিরামপুর পৌরশহরের চুরকুই (চরকাই) গ্রামে বিকেল আনুমানিক ৫ ঘটিকায় ঘরের দরজা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বাক প্রতিবন্ধী মুনতাহা আক্তার। সে পৌরশহরের ১ নং ওয়ার্ডের মোতাহার হোসেনের মেয়ে। মুনতাহা আক্তার বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, বাক প্রতিবন্ধী মুনতাহা আক্তারের ৩ থেকে ৪ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল এক ছেলের সাথে। ছেলেকে ঘরজামাই থাকতে হবে এই শর্তে কিন্তু ছেলে বিয়ের পর ১ থেকে দেড় মাস সংসার করে পরবর্তীতে বাক প্রতিবন্ধী মুনতাহাকে ছেড়ে দেয়। এরপর থেকে মুনতাহা মাঝে মধ্যে রেগে গেলে ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে। পরবর্তীতে রাগ থেমে গেলে দরজা খুলে বাহিরে আসে। আজকে জমিতে ধানের গাড়ি ফেঁসে যাওয়ায় বাড়িতে বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে রেখে গাড়ির কাছে যায় মা মোর্শেদা। বাড়ি ফিরে এসে দেখে দরজা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে মুনতাহা। মা মোর্শেদার চিৎকারে স্থানীয়রা ঘরের পেছনে জানালা ভেঙ্গে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে কিন্তু ততক্ষণে সে না ফেরার দেশে চলে যায়।
বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে বিরামপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।