ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ত্রিশালে তিন দিনব্যাপী স্থানীয়ভাবে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তীর সমাপনী অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। প্রশাসনের নির্দেশে স্বেচ্ছাসেবকরা সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা দিলে এ ঘটনা ঘটে।
নজরুল জন্মজয়ন্তীর সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল তিনটার দিকে। আমন্ত্রিত অতিথিরা কবি নজরুলের জীবনী নিয়ে আলোচনা শুরু করলে জেলা এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা ছবি তোলা ও ভিডিও করতে গেলে অনুষ্ঠানে দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবকরা সাংবাদিকদের বাঁধা দেয়। অনুষ্ঠান কভারেজ দিতে যাওয়া সাংবাদিকরা কেন ছবি তুলতে পারবে না জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবকরা জানায়, প্রশাসনের নির্দেশ। সাংবাদিকদের দুই প্রতিনিধি ইত্তেফাকের ফারুক আহমেদ ও আজকের পত্রিকার সাইফুল আলম তুহিন মঞ্চে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী’র কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি তাদের বলেন, কাছে গিয়ে ছবি তুললে ভিআইপিদের সমস্যা হয়। দুর থেকে ছবি তুললে ভালো হয়। ইউএনও’র এমন বক্তব্যে অনুষ্ঠান বয়কট করে, অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। তবে পরবর্তীতে বক্তব্যটি অস্বীকার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী।
এর আগে ২৫ মে রোববার তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনীতে একই ঘটনার মুখোমুখি হন যমুনা টিভির ময়মনসিংহ ব্যুরোর ক্যামেরা পারসন দেলোয়ার হোসেন।
ছবি তুলতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার শিকার আজকের পত্রিকার ত্রিশাল প্রতিনিধি সাইফুল আলম তুহিন জানান, ইউএনও বলেছেন, কাছে গিয়ে ছবি তুললে ভিআইপিদের সমস্যা হয়। দুর থেকে ছবি তুললে ভালো হয়।
স্থানীয় সাংবাদিক ইমরান হাসান বুলবুল বলেন, 'অনুষ্ঠানের প্রথমদিন আমিও হেনস্তার শিকার হয়েছি। আমি ছবি তুলতে গেলে বাঁধা দিয়ে বলেন, এখান থেকে ছবি নেওয়া যাবে না। দূর থেকে ছবি তুলেন। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও ইউএনও'র নিয়োগকৃত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ধাক্কা দিয়ে খারাপ আচরণ করে।
ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণত সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নোমান বলেন, 'পেশাদার সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে বাঁধার সম্মুখীন হওয়া দুঃখজনক। এর আগে সবসময় জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নজরুল জন্মজয়ন্তীতে সাংবাদিকরা নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করেছে। এবারের স্থানীয় পর্যায়ে পালিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে না পারা স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা।'
দায়িত্বপ্রাপ্ত রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির টিম লিডার হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ছবি তুলতে নিষেধ করেননি। তবে ভিআইপিদের অসুবিধা হবে জানিয়ে তাদের দুইজন দুইজন করে কাছে যেয়ে ছবি তুলতে বলা হয়েছে।'
ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'স্বেচ্ছাসেবকরা বুঝতে পারে নাই, চিনতে পারে নাই তাই কাকে যেন বাঁধা দিয়েছিল। সাংবাদিকরা ফুটেজ নিতে পারে কোনো সমস্যা নাই।'