একটি ইজিবাইক আর দুই সন্তান। এসব সঙ্গে নিয়ে ছোট ছোট খুনসুঁটি, আশা, হতাশার দোলাচলে চলছিল জরিনা ও আল-আমিনের সংসার। সেই ভালোবাসার সংসারে হানা দেয় অভাব। সংসারের চাহিদা মেটাতে হঠাৎ কিস্তির টাকায় কেনা ইজিবাইকটি বিক্রি করে দেন আল আমিন। তারপর আয় বন্ধ হয়ে সংসারে শুরু হয় কলহ, নেমে আসে ঘোর অনামিশা। সবশেষ ছোট দুই সন্তান রেখেই অভাবের সংসারকে চিরবিদায় জানান তারা; একসঙ্গে বেছে নেয় আত্মহননের পথ।
রোববার (২৫ মে) দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর এলাকায় ঘটেছে এই হৃদয় বিদারক ঘটনা।
নিহত আল আমিন ওই এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে এবং জরিনা একই ইউনিয়নের নোয়াপাড়ার ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে। আল আমিন পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
জরিনার ভাই আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, অভাব-অনটন ও সংসারের টানাপোড়নে তাদের মানসিক চাপ তৈরি হয়। কিস্তিতে কেনা ইজিবাইকটি কয়েক দিন আগে আল আমিন বিক্রি করে দেন। এরপর শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। এই দুঃখ, রাগ ও অপ্রাপ্তির হতাশা থেকেই তারা একসঙ্গে আত্মহননের পথ বেছে নেন। রোববার রাতে তারা কেরির টেবলেট (চালের পোকা মারা ওষুধ) খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রাত ১০টার দিকে দুজনকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরিনা জরুরি বিভাগেই মারা যান। কিছুটা সময় পর রাত ১টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আল আমিনও।
স্বামীকে হত্যার পর বুকের ওপর ‘সরি জান আই লাভ ইউ’ লিখে স্ত্রীর আত্মহত্যাস্বামীকে হত্যার পর বুকের ওপর ‘সরি জান আই লাভ ইউ’ লিখে স্ত্রীর আত্মহত্যা
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অভাব-অনটন ও মানসিক কষ্ট থেকেই এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।