ঢাকা
১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:২২
logo
প্রকাশিত : মে ১৫, ২০২৫

‘৯ বিয়েসহ’ তালহার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ স্ত্রী হ্যাপীর

স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ের অভিযোগ করেছেন সাবেক মডেল-অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী। জাতীয় দলের সাবেক এক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে আলোচনায় এসেছিলেন হ্যাপী। এ পর্যন্ত তার স্বামী তালহা ইসলাম ৯টি বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

গত সোমবার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন হ্যাপী।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান হ্যাপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস।
তিনি বলেন, নাজনীন আক্তার হ্যাপি মডেলিং ও বিনোদন জগত ছেড়ে দ্বীনের পথে আসে। গত ৭ বছর আগে নড়াইলের সাবেক এমপি প্রয়াত মুফতি শহিদুল ইসলামের ছেলে মুফতি তালহা ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু সময় পর থেকে জানতে পারেন- তালহা ইসলামের বিভিন্ন নারীর প্রতি আসক্তি রয়েছে।

নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের একপর্যায়ে কয়েক মাসের জন্য বিয়ে করেন তিনি। এখন পর্যন্ত তালহা ইসলাম ৯টি বিয়ে করেছেন।
যৌতুকের জন্য হ্যাপীকে মারধর করা হয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, চারিত্রিক এসব সমস্যার পাশাপাশি তালহা ইসলাম প্রায়ই হ্যাপী ও তার সন্তানের ওপর নির্যাতন করেন। সামান্য কথার বিপরীত হলেই গায়ে হাত তুলতেন তালহা।

নাজনীন আক্তার হ্যাপী বলেন, তার আসল চরিত্র প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই আমি তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য তালাকের কথা অসংখ্যবার বলেছি। যতবারই আমি তালাকের কথা বলতাম ততবারই তিনি আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। তালাকের শরীয়তসম্মত অধিকারটা আমার কাছে নেই। তাকে যদি খোলা তালাকের কথা বলা হয় তখন তিনি বিশাল অ্যামাউন্ট দাবি করেন।

যেমন- এক কোটি টাকা অথবা বাচ্চাকে আজীবনের জন্য দিয়ে দিতে হবে কোনো দিন দেখতে পারব না- এরকম ধরনের শর্ত দেয়।
মামলা করার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে সাবেক এই অভিনেত্রী বলেন, গত পরশু মামলা করার পর রাতেই তালহা বাসায় লোকজন নিয়ে এসে আমার ৫০-৬০ লাখ টাকার ব্যবসায়িক মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

এ সময় নাজনীন আক্তার হ্যাপী বলেন, এতদিন মারধরের ভয়ে চুপ ছিলাম। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় সবকিছু প্রকাশ করতে বাধ্য হচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে তালহা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তার মোবাইল সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি এখন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে এর আগে বুধবার দুপুরে হ্যাপি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে লেখেন, ‘আমিসহ তিনটা বিয়ের কাগজ আছে। বাকিগুলার যেন প্রমাণ না থাকে আর টিস্যুর মতো ইউজ করে সুযোগ বুঝে তার মৌখিক তালাক দিয়ে শেষ করা যায়! এগুলোর বাইরেও আমার অজানা অনেক কিছু থাকতে পারে যা আমি জানিনা। লাইভে যখন আসবেন মুফতি তালহা ইসলাম তখন এই বিষয়গুলো যদি মুসলমান হয়ে থাকেন স্বীকার করেন, যে এই নয়টা যেটা আপনাকে লিস্ট দেওয়া হয়েছে এখানে কোনোটা মিথ্যা কিনা! যদিও আপনি একটা আত্ম মিথ্যাবাদী সত্যর সঙ্গে মিথ্যা মিশ্রিত করার কথাবার্তা বলেন। আপনি কি বলবেন সেটা তো জানি না। তবে এই কথাগুলো সত্যি আল্লাহর উপর কসম করে বলতে পারি।’

তিনি লিখেছেন, ‘খুলনায় যে মহিলাদেরকে আপনি তালাক দিয়েছেন, প্রেগন্যান্ট অবস্থায় তালাক দেওয়ার পর বাচ্চাটাকে সাড়ে চার বছরে, তিন চার বারও আপনি সেই বাচ্চাকে দেখতে যাননি। শুধু মাসে মাসে পাঁচ দশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। বাচ্চার প্রতি যদি আপনার এতই মহব্বত, তাহলে সেই বাচ্চার প্রতি নেই কেন? আপনি কেন টানাটানি করেন আমার বাচ্চা নিয়ে? আমি সোনার ডিম পাড়া হাঁস তাই?’

এরপর হ্যাপি তালহার নয় বিয়ের তালিকা দেন। সেগুলো হলো— ‘নাজনীন আক্তার হ্যাপী (আমি); মারইয়াম (অবিবাহিতা বয়স্কা, কাশ্মীর); তামান্না (অবিবাহিতা, হাজারীবাগ); হাফসা (ডিভোর্সি তিন বাচ্চাসহ বড় বড়, খুলনা, যেখানে তালহার মেয়ে আছে); তাসলিমা (বিধবা, বয়স্কা কয়েকটা বাচ্চাসহ, মানিকগঞ্জ); তামান্না-২ (ডিভোর্সি বাচ্চাসহ, উত্তরা); নুর (বিধবা, ২ বাচ্চাসহ চট্টগ্রাম); খাদিজা (ডিভোর্সি ২ বাচ্চাসহ) কেরানীগঞ্জ) ও মুশফিকা (ডিভোর্সি আগের ছেলে সন্তান (১২) আছে)।

এদিকে, সোমবার (১২ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালতে বাদী হয়ে নারী নির্যাতন দমন আইনে হ্যাপী যে মামলা করেন সেই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পাঁচ লাখ টাকা মোহরানায় নাজনীন আক্তার হ্যাপীর সঙ্গে আসামি মুফতি মোহাম্মদ তালহার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মোহরানার টাকা অপরিশোধিত থাকে। এ সময় হ্যাপীর মা তার স্বামীকে সংসারের আসবাবপত্র কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা উপহার দেন। এরপর তাদের ঘরে ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্মের পর কিছুদিন পর্যন্ত স্বামী তালহা হ্যাপীর ভরণপোষণ দিতেন। তবে পরবর্তী সময়ে তালহা স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়া বন্ধ করেন এবং সাংসারিক ছোটখাট বিষয়ে স্ত্রী হ্যাপীকে মারধর করেন।

এজাহারে তিনি আরো অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৪ মে ভুক্তভোগী বাদী হ্যাপী জানতে পারেন যে, তার স্বামী তালহা গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। বিয়ের বিষয়ে স্বামীর কাছে জানতে চাইলে তিনি হ্যাপীকে মারধর করেন। পরবর্তীতে গত ১০ মে হ্যাপীর ভাড়া বাসায় এসে তার স্বামী তালহা নিজ রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এসময় হ্যাপী যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেধড়ক মারধর করেন আসামি মুফতি তালহা। একই সঙ্গে যৌতুকের অর্থ না দিলে হ্যাপীকে তালাক দেওয়ার হুমকিও দেন তালহা।

২০১৪ সালের জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে আলোচনায় আসেন মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী। পরবর্তীতে অভিনয় ছেড়ে পর্দার আড়ালে চলে যান তিনি। ইসলামি শিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন আমাতুল্লাহ। বিয়ে করেন মুফতি মোহাম্মদ তালহা নামক একজন মাদরাসা শিক্ষককে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram