ঢাকা
২রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:২০
logo
প্রকাশিত : মে ১, ২০২৫

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ

বিশ্বের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের দিন মহান মে দিবস আজ। ১৮৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এই দিনে। জীবনের বিনিময়ে মালিকপক্ষের কাছ থেকে দাবি আদায়ের মধ্য দিয়েই স্বীকৃতি পেয়েছিল এই দিনটি। এরই ধারাবাহিকতায় ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে’ প্রতিপাদ্যে প্রতিবারের মতো এবারও পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস।

এদিকে এবারের মহান মে দিবসে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিশ্চিতে শ্রম আইন পাকাপোক্ত করে দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। শ্রম আইনের ব্যাপক পরিবর্তন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনটা করে দিতে চাই। আমার ইচ্ছা আছে আমি থাকতে থাকতে একটা শ্রম আইন পাকাপোক্ত করে দেওয়া।

একই সঙ্গে চলতি বছরে মহান মে দিবস ঘিরে সরকারের পক্ষ থেক একগুচ্ছ আয়োজন রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

কেন এই মে দিবস?

বিশ্বজুড়ে ১ মে, এই দিনটি শ্রম দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। তবে এই দিবস পালনের পেছনে রয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দী ও তার আগের শ্রমিকদের বঞ্চনার করুণ ইতিহাস।

এই সংগ্রাম ও ইতিহাসের শুরুটা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। ১৮৮৬ সালের এই দিনে শিকাগো শহরের হে মার্কেটে ক্রমেই জড়ো হতে থাকেন শ্রমিকরা। তাদের দাবি ছিল, ন্যায্য মজুরি এবং কাজের জন্য নির্ধারিত সময়। যুগের পর যুগ তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বঞ্চনার প্রতিবাদ ছিল এই আন্দোলন। একেকজন শ্রমিককে সেই সময় বাধ্যতামূলক খাটানো হতো ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা, বিনিময়ে পারিশ্রমিক ছিল খুবই সামান্য।

শ্রমিকদের সেই আন্দোলনে ঘটে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। হঠাৎ শ্রমিকদের ঘিরে থাকা ভিড় থেকে কেউ একজন পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করেন। ঘটনার আকস্মিকতায় সেদিন বিহ্বল ছিলেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রায় সবাই। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। আর ঝরে পড়ে ১০ থেকে ১২টি তাজা প্রাণ। পুলিশসহ ওই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ছিল আরও অনেক।

বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের বঞ্চনার পাশাপাশি কণ্ঠরোধের চেষ্টায় নির্মম এক ইতিহাস তৈরি হয় সেদিন। ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলনে প্রাণ হারানো সেই মানুষগুলোর স্মরণে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। পরে বিশ্বজুড়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে ইতিহাস সৃষ্টির এক নিদর্শন হিসেবে পালন করা হতে থাকে এই শ্রমিক দিবস কিংবা মে দিবস।

এরপর ১৮৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে প্যারিসে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে, পরের বছর থেকে এই প্রতিবাদের বার্ষিকী পালন করার প্রস্তাব করেন রেমন্ড লাভিনে। সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের সূচনা হয়। আর ১৮৯১ সালে প্যারিসেই দ্বিতীয় কংগ্রেসে এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। প্রথমবারের মতো স্বীকৃতি পায় মে দিবস।

এরপর ১৯০৪ সালে আমস্টারডাম শহরে সমাজতন্ত্রীরা সব গণতান্ত্রিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নের প্রতি নতুন এক আহ্বান জানান। নিহত সেই শ্রমিকদের স্মরণে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি আদায় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বজুড়ে ১ মে মিছিল ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে তারা। একই সঙ্গে সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সব শ্রমিক সংগঠন মে মাসের ১ তারিখে ‘বাধ্যতামূলকভাবে কাজ না-করার’ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

১৯১৭ সালে রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের পর থেকে বিপুল সমারোহে দেশটিতে মে দিবস উদযাপিত হতে থাকে। পাশাপাশি এই উপলক্ষে দেশটিতে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। এরপর থেকেই এই দিবস শ্রমিকদের ওপর জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক প্রতীকী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশেই এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে প্রতিবছর পালন করে বাংলাদেশ।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় বিশেষ বিজ্ঞাপন প্রচার।

দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠান ও বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রচার।

মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram