কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরগিরিশে মাদকাসক্ত নিজ সন্তান ও চাচাতো ভাইয়ের নির্মম প্রহারে প্রাণ গেল কৃষক সেলিম মিয়ার (৪৭)। মারপিটে আহত সেলিমের স্ত্রী বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
সেলিমের ছোট ভাই সিরাজুল ইসলাম জানান, আমার ভাতিজা জাহাঙ্গীর (১৯) নেশায় আসক্ত। এ কারণে সংসারে বাবা ছেলের মাঝে প্রায়ই বিবাদ লাগতো। গত বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে নিজ বাড়িতে নেশার টাকা নিয়ে বাবা ছেলের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে এই ঝগড়ায় জাহাঙ্গীরের পক্ষ নিয়ে এগিয়ে আসেন আমার চাচাত ভাই মৃত আসমত প্রধানের দুই ছেলে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত সালাম মাস্টার ও শহিদুল ইসলাম। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমার ভাই সেলিমকে মারধর করতে থাকে। এসময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে তার স্ত্রী জান্নাতী খাতুন (৪২)। এসময় তাকেও ওই তিনজন মারধর করে। এক পর্যায়ে মাথায় লাঠি দ্বারা আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সেলিম। রক্তক্ষরণের এক পর্যায়ে সে অচেতন হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে জাহাঙ্গীর ও দুই চাচাত ভাই সালাত মাস্টার ও শহিদুল ঘটানাস্থল থেকে সটকে পড়ে। পরে সেলিম ও তার আহত স্ত্রীকে উদ্ধার করে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাত দশটায় হাসপাতালেই মারা যান সেলিম মিয়া।
এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিবার ফোন করেও সালাম মাস্টার ও শহিদুলকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানিয়েছে ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছে।
সেলিমের প্রতিবেশী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম জানান, সেলিম একজন ভালো মানুষ ছিলেন। শুধুমাত্র মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে পিতার প্রাণ গেল এটা সত্যিই দুঃখজনক। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হওয়া দরকার।
চরগিরিশের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে গোটা চরাঞ্চল। একারণে মারামারির ঘটনাও বেড়ে গেছে। কৃষক সেলিম হত্যায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানাচ্ছি।
কাজিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম জানান, ঘটনাটি মৌখিকভাবে জেনেছি। লাশের পোস্টমর্টেম হয়েছে জানতে পেরেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।