জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বরিশালে বসতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। গরুর দাম গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত কেনাবেচা হচ্ছে না। গরু বিক্রেতারা জানান, হাটে আসা বেশির ভাগ মানুষ গরুর দাম শুনে চলে যান। এখন তারা বাজার যাচাই করছেন। হাটে আসা মানুষ জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরে গরুর দাম খানিকটা বেশি মনে হয়।
বরিশালের বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, গত বছর ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় যে গরু বিক্রি হয়েছে, এবারে একই আকারের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৮৫ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত।
আবার মাঝারি সাইজের গরু গত বছর যা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ হাজার টাকায়, সেই আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা। তাই হাটে অসংখ্য গরু আসা সত্ত্বেও কেনাবেচা প্রায় শূন্যের কোঠায়।
বরিশাল নগরীতে তিনটিসহ জেলার ১০ উপজেলায় এ বছরে ৬৩টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এসব হাটে বরিশালের খামারিসহ যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা গরু নিয়েছেন।
চরমোনাই গরুর হাটে আসা ক্রেতা মুশফিকুর রহমান বলেন, গত বছর যে গরু ৮০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম, সেই গরুর দাম এ বছরে চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া গরুর ব্যাপারীরা বরিশালের হাটগুলোতে ক্ষণে ক্ষণে নানা অজুহাতে গরুর দাম বাড়াচ্ছেন।
নগরীর বাঘিয়ার গরুর হাটে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। তাই বাজার যাচাই করছি। ঈদের এখনো বাকি আছে। বিভিন্ন হাটে গরুর দাম যাচাই করে কোরবানির আগের দিন যেকোনো হাট থেকে বাজেট অনুসারে গরু কিনব।’
কুষ্টিয়া থেকে বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রার হাটে আসা ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত সোমবার ১২টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছি। একটিও বিক্রি হয়নি। ক্রেতারা আসছেন। দাম দর করছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী দাম বলছেন না। উৎপাদন খরচের চেয়েও দাম কম বলছেন তারা।’
চরমোনাই হাট ইজারাদারের সহযোগী বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতাদের এমন বাস্তবতায় বিপাকে পড়েছেন হাট ইজারাদাররাও। এবারে গৃহস্থ পশু আসছে না। যারাই হাটে গরু নিয়ে আসছেন, তারা ব্যাপারী।
এ কারণে কেউ দাম ছাড়ছেন না। ফলে কেনাবেচার অবস্থা খারাপ। পাশাপাশি কোরবানির কয়েক দিন বাকি থাকায় ক্রেতারাও বিভিন্ন বাজার যাচাই করছেন। ফলে হাটে আসা ক্রেতার চেয়ে দর্শক বেশি। তবে আশা রাখি, দু-এক দিনের মধ্যে এই অবস্থার
পরিবর্তন হবে।’
এদিকে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখারের কালী বাজারের শাকিল সুমনের বিশাল দেহী গরু ফনী-২ বিক্রি করতে না পেয়ে গত শনিবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে গরুটি চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকার পশুর হাটে রয়েছে। ওই হাটে নগরের সবচেয়ে বড় ও নামিদামি কোরবানির পশু বিক্রি হয়।