

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের রাজনীতিতে গত কয়েকদিন ধরে টানা কর্মসূচি ও আলোচনা চলমান রয়েছে। একদিকে দলীয় ঐক্যের বার্তা, অন্যদিকে পরিবর্তিত বাস্তবতায় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি—এই দুই ধারাই একসঙ্গে সামনে এসেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ডিসেম্বর গাজীপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলটির ছয়জন মনোনয়ন প্রত্যাশী সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, গাজীপুর-৬ আসন বিলুপ্ত হয়ে পুনরায় গাজীপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ফলে ভোটার সংখ্যা, ভৌগোলিক বিস্তৃতি ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এই নতুন বাস্তবতা বিবেচনায় না নিয়ে পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হলে নির্বাচনীভাবে দল ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে তারা মত দেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানানো হয়।
এর পরদিন ১৬ ডিসেম্বর একই দাবিতে টঙ্গীতে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। আদমজী মাঠ থেকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভ মিছিলটি টঙ্গীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জনগণের মতামত, তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার এলাকার বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা জরুরি।
এর মধ্যেই বুধবার সকালে টঙ্গীর একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির নির্বাচনী প্রাক-প্রস্তুতি সভা। সেখানে গাজীপুর-২ ও বিলুপ্ত গাজীপুর-৬ আসনের সাতজন মনোনয়ন প্রত্যাশী একই মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম. মঞ্জুরুল করিম রনির প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানান। সভায় বক্তারা বলেন, মনোনয়ন নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও নির্বাচনের মাঠে দলীয় ঐক্য অটুট রখে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গাজীপুর-২ আসনে একদিকে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল, অন্যদিকে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ প্রস্তুতি সভা—এই দুই ধারার কর্মসূচি আসনটির রাজনৈতিক গুরুত্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রাকেই স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গাজীপুর-২ আসন যে বিএনপির জন্য একটি বড় পরীক্ষার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, তা এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়েই প্রতিফলিত হচ্ছে।

