ঢাকা
২রা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৯:৪১
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ২, ২০২৫

অব্যবস্থাপনা ও সংকটে ধুঁকছে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মো: সাগর মল্লিক, ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: জনবল সংকট, চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দালালদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা। একসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ ১৫ হাসপাতালের তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানটি এখন নেমে এসেছে ৯৩ নম্বরে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে হাসপাতালের সুনাম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু পরিচ্ছন্নতার জন্য মঞ্জুরীকৃত ৭টি আয়া ও সুইপারের মধ্যে কর্মরত মাত্র একজন। ফলে হাসপাতালের ভেতর ও টয়লেটে দুর্গন্ধে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। তাদের অভিযোগ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট থেকে ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিসসহ পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

মোট মঞ্জুরীকৃত পদের ৩৬.৫% শূন্য রয়েছে। ৩০ জন প্রথম শ্রেণির চিকিৎসকের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩ জন। একজন জুনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট কাগজে-কলমে থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন অন্য হাসপাতালে কর্মরত থাকায় অনেক অপারেশন বন্ধ হয়ে আছে। গাইনি ও অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় প্রসূতি রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। ফলে বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করছেন দরিদ্র রোগীরা।

এছাড়া ৩ জন কনসালটেন্ট থাকলেও কেউ সপ্তাহে ১ দিন, কেউ ২ দিন অফিসে আসেন। বাকি সময়ে তারা ডেপুটেশনে অন্যত্র কর্মরত থাকেন। এই সুযোগে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে মেকানিক না থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ল্যাব যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসকদের ডিউটি সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা হলেও অনেকেই সকাল ১০টার আগে আসেন না এবং দুপুর দেড়টার মধ্যে চলে যান। কিছু চিকিৎসক ৭০% কমিশনের লোভে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করাচ্ছেন। এদিকে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন নষ্ট এবং আধুনিক ল্যাব মেশিন নেই। ফলে রোগীরা বিভ্রান্ত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান সাগর বলেন, “জনবল সংকটে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ বা আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। এসব পদে নিয়োগ আমার হাতে নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সচেতন মহল মনে করছেন, ফকিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঘিরে একটি দালাল চক্র সক্রিয়। জরুরি ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ ও অব্যবস্থাপনা রোধ না করলে এ হাসপাতালের মান পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। তারা প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

রোগীরা বলছেন, দ্রুত চিকিৎসক, নার্স ও সহায়ক কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতে সুইপার নিয়োগ, অপারেশন থিয়েটার চালু এবং গাইনি-অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দালাল ও কমিশন বাণিজ্য বন্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা এবং নষ্ট এক্স-রে ও ল্যাব মেশিন দ্রুত মেরামতের দাবি তুলেছেন তারা।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram