চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা সংকট, পানি বেশীসহ নানা অজুহাতে চিলমারী-রৌমারী নৌপথে খুড়িয়ে চলছে ফেরি। এতে এই পথটি অতি অল্প সময়ে পরিবহন শ্রমিকদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও ফেরি কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়মের কারণে নতুন এই পথটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা। পণ্যবাহী পরিবহনের চালক, শ্রমিকদের দাবী বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃক পরিবহন ভাড়া বেশী নেয়া এবং সময়মত ফেরি না ছাড়ায় দিন দিন এই পথে পারাপারের জন্য পণ্যবাহী গাড়ীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার রমনা ঘাট থেকে চিলমারী-রৌমারী নৌপথে শুষ্ক মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে যাওয়ায় নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। চলতি মৌসুমে নাব্যতা সংকটে দীর্ঘ ৫মাস বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল শুরু হলেও তা বেশী দিন চলেনি। নদীর পানি বৃদ্ধিতে ঘাট অচল হয়ে আবারও বন্ধ থাকে ফেরি। এরপর পরিবহন কম থাকার অজুহাতে নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো ফেরি চলায় নানা ভোগান্তিতে পড়ে পরিবহন শ্রমিকরা। এছাড়াও পরিবহনের ভাড়া বেশী নেয়াসহ নানা অভিযোগ করেন পরিবহন শ্রমিকরা। অনিয়মিত ফেরি এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় উভয় পাশ্বে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তারা। পণ্যবাহী পরিবহণের চালক, শ্রমিকদের দাবী বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃক পরিবহন ভাড়া বেশী নেয়া এবং সময়মত ফেরি না ছাড়ায় দিন দিন এই পথে পারাপারের জন্য পন্যবাহী গাড়ীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
রোববার দুপুরে ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কুঞ্জলতা ও কদম নামের দুটি ফেরি ঘাটে অবস্থান করছে। সকাল ৭টায় পণ্যবাহী পরিবহন নিয়ে একটি ফেরি রৌমারী যাওয়ার কথা থাকলেও অজানা কারণে তা যায়নি। রাস্তার উপরে ৫টি পণ্যবাহী গাড়ীসহ অন্য আরও দুটি গাড়ী দাড়িয়ে থাকতে দেয়া যায়। এসময় পরিবহন শ্রমিক গোলাপ ড্রাইভার, সাজু মিয়া, রিপন মিয়াসহ অনেকে জানান, সকাল ৭টায় ফেরি ছাড়ার কথা থাকলেও তারা দুপুরের পর ফেরি ছাড়বেন বলে জানিয়েছেন। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হবো। অসময়ে ফেরি পার হওয়ায় আমরা আজ থাকায় ঢুকতে পারবো না, রাস্তায় পড়ে থাকতে হবে এমন কথাও জানান তারা। তারা আরও জানান, ফেরি কর্তৃপক্ষ নানা অনিয়ম করে ঘাটটি বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করছেন।
ভূরুঙ্গামারী থেকে আসা গাড়ীর চালক সোলায়মান আলী জানান, আমাকে দেয়া টিকেটে গাড়ীর ভাড়া ৩হাজার ৯শ টাকা লেখা আছে, অথচ আমার নিকট হতে ৪হাজার ৬৫০টাকা নেয়া হয়েছে। ওই ব্যাক্তিকে দেয়া টিকেটে দেখা যায় গাড়ী ভাড়া ৩হাজার ৯শ টাকা এবং অন্যান্য ভাড়া হাতে লেখা রয়েছে ৬৭৫টাকা। সবমিলে ৪হাজার ৫৭৫টাকা হলেও তার নিকট নেয়া হয়েছে ৪হাজার ৬৫০টাকা।
এ বিষয়ে ফেরি টার্মিনাল সহকারী সফিউল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে ওই ৬৭৫টাকা ওভার লোডের জন্য নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ওভারলোড কিভাবে নির্ণয় করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইডিয়া করে অতিরিক্ত ৩টনের ভাড়া বাবদ এটি নেয়া হয়।
বিআইডব্লিউটিসি’র ম্যানেজার বাণিজ্য প্রফুল্ল চৌহান বলেন, সকালে পরিবহন কম থাকায় ফেরি ছাড়া হয়নি। ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, অতিরিক্ত মালামালের জন্য আগে ২টনের টাকা নেয়া হতো এখন ৩টনের ৬৭৫টাকা নেয়া হচ্ছে। ব্যয় বেশী আয় কম, তাই সার্ভিল চালু রাখতে ওদের বলে কয়ে এ টাকা নেয়া হয়।