গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী থেকে ঈশ্বরগঞ্জ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে আছে ৩ কিলোমিটারের কাজ। কাজ আটকে থাকায় ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকায় নির্মিত সড়কে চলাচলের সুফল পাচ্ছেনা জনসাধারণ।
প্রায় ৫ বছর আগে সড়কটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সড়কের কাজ শেষ হচ্ছে না। কাজ আটকে থাকা ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের পৌর এলাকার ওই অংশের ৩ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। প্রায় প্রতিদিনই গর্তে যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসী ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন করে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করেছে।
জানা যায়, ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে আঠারবাড়ী থেকে ঈশ্বরগঞ্জ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে। সে বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু রাস্তাটির কাজ আটকে আছে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকায় ৩ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ না করায়। পৌর এলাকায় সড়কের দুই পাশে বাসা-দোকানপাটের মালিকদের কেউ অধিগ্রহণের টাকা ছাড়া জমি ছাড়তে রাজি নন। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
এই সড়কটিই ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা হওয়ায় সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় খানাখন্দকে ভরা রাস্তাটি দিয়ে রোগী নিয়ে যাতায়াতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে অধিগ্রহণ জটিলতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে। সড়ক বিভাগ আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়েই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের কিছু অংশেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। শুধু তাই নয়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। এ সড়কটিও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের মাধ্যমে মানুষকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
ইজিবাইক চালক রফিক, সুমন, হারেছ মিয়া ও খালেক জানান, ভাড়া নিয়ে যাওয়ার সময় খানাখন্দে ভরপুর সড়কটিতে যেতেই পুরো ইজিবাইক লাফালাফি করে। এতে অনেক সময় ইজিবাইক উল্টেও যায়। তাছাড়া অনেক জায়গায় অর্ধেক কাজ করে ফেলে রাখায় রডের অংশ বের হয়ে আছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ সড়ক দিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। একজন রোগীর অভিভাবক রাহেলা বেগম জানান, তিনি তার ভাইয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই ভাঙ্গা সড়কে পৌঁছতেই ইজিবাইকের ঝাঁকিতে রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস ছালাম বলেন, ‘সড়কটির দুই পাশের ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য এ মাসের ৮ তারিখে ১১৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন পাস হয়েছে। এখন ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য নোটিশ করা হবে। এতে দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।’