মো. নজরুল ইসলাম, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে দেখা দিয়েছে খাবার পানির তীব্র সংকট। দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি, খাল, বিল, নদী শুকিয়ে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
কৃষি নির্ভর এ এলাকায় একদিকে যেমন খাল, বিল, নদী শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে অন্যদিকে সাবমার্সেবল টিউবওয়েলে পানি উঠলেও ব্যক্তি মালিকানায় বসানো অধিকাংশ অগভীর টিউবওয়েল থেকে বৈদ্যুতিক পাম্প দিয়েও পানি তোলা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে প্রায় তিন লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ জনপদে খাওয়া-গোসল ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাজসহ কৃষি জমিতে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে মানুষসহ গাছপালা, পশু-পাখি ও বিভিন্ন প্রকার জলজপ্রাণীর অস্তিত্ব হুমকীর মুখে পড়বে।
এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু জানান, খাল, বিল, নদী শুকিয়ে সেচ প্রকল্পগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। এতে প্রায় ১০ হাজার একর ফসলী জমি হুমকীর সম্মুখীন। তাছাড়া অগভীর টিউবওয়েল থেকে পানি না উঠায় দেখা দিয়েছে খাবার পানির তীব্র সংকট। বিগত বছরগুলোতে সাবমার্সেবল টিউবওয়েল দলীয় বিবেচনায় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এসব টিউবওয়েলে সাধারণ মানুষের কোন উপকারে আসেনি। তিনি অষ্টগ্রামে সাবমার্সেবল টিউবওয়েলের বরাদ্দ বাড়ানোসহ দ্রুত শুকিয়ে যাওয়া খাল, বিল ও নদী খননের দাবী জানান।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসাইন জানান, অপরিকল্পিত ভাবে নলকূপ স্থাপন, শুষ্ক মৌসুমে অনাবৃষ্টি, ব্যাপক ভাবে পানির অপচয় এবং হাওর-বাওর, খাল-বিল ও নদী-নালার পানি শুকিয়ে পানি রিফিল বা পুনরায় পূরনকরণের অভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে শুষ্ক মৌসুমের এই দুই থেকে তিন মাস অগভীর নলকূপে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়ে থাকে। তাই এই সময়ে অগভীর নলকূপ থেকে পানি পাওয়া যায়না। তিনি ভবিষ্যতে ব্যক্তি মালিকানা সকল অগভীর নলকূপ বসানোর ক্ষেত্রে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরামর্শ নেওয়ার আহবান জানান।