নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জুলাই আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাসহ আরও দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শনিবার(১৭ মে) বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর আদালতে শুনানি শেষে তাকে এই দুই মামলায় ফের গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে আদালতে শুনানির জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানিতে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন আইভী। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে করা মোট পাঁচটি মামলার মধ্যে এ পর্যম্ত তিনটিতে গ্রেফতার দেখানো হলো।
কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদিন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সবেক এই মেয়র আইভীকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হত্যাসহ দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানানো হলে শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এদিকে আইভীর আইনজীবী এস এম সিদ্দিকুর রহমান জানান, আইভী দলমত-নির্বিশেষে সবার জনপ্রিয় সাবেক মেয়র ছিলেন। তিনি আন্দোলনে কখনো মাঠে নামেননি। তাকে সব কটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এতে আমাদের আইনিপ্রক্রিয়া চালাতে সহজ হবে।
একটি মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। সে সময় শামীম ওসমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়লে বাদীর স্বামী রিকশাচালক তুহিনের মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তুহিনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার বাদী হয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
অপরদিকে অন্য মামলার এজাহারে বলা হয়, একই দিন (২০ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। শামীম ওসমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হকার নাদিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে তিনি বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনায় নাদিমের বাবা দুলাল হোসেন বাদী হয়ে গত বছরের (১ সেপ্টেম্বর) শামীম ওসমান ও তার ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।