এম এ ফয়সাল, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশে সংঘটিত সকল হত্যার মাস্টারমাইন্ড ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। জুডিশিয়াল কিলিং মিশন পরিচালনা করে নিরপরাধ মানুষদেরকে নির্বিচারে হত্যা, দিনের ভোট রাতে দেওয়া, নিরপরাধ মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানিসহ যত মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড সংঘটিত হয়েছে; সবকিছুই জালিম শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। জুলাই—আগস্টে যারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন আমরা তাদের কাছে ঋণী। তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আজকে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, যাদেরকে শহীদ করা হয়েছে ,তারাও সেই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। সুতরাং সকল হত্যাকান্ডের বিচার হতেই হবে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ মফিদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহাঃ ইজ্জতউল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, নায়েবে আমীর ডাঃ শেখ মাহমুদুল হক, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমার, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গাজী সুজায়েত আলী, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ওমর ফারুক।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও শিবিরের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুজ্জামান, কেশাবপুর উপজেলা আমীর অধ্যাপক মোক্তার আলী, মাওলানা কবিরুল ইসলাম, শাহ আলম, শিবির সভাপতি আল মামুন, ইয়াকুব, সাব্বির, ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, জামায়াত ইসলামী এদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চায়। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চায়। শেখ হাসিনার সরকার এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছিল, ভোটাধিকার হরণ করেছিল, দিনের ভোট রাতে দিয়ে ইতিহাসের কালোযুগ সৃষ্টি করে ছিল। ২৪'র গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত বিনা বিচারে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে, সাজানো বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না জেনেই হাসিনা সরকার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ভোট দেননি। ১৪, ১৮, ২৪ এর নির্বাচনে জণগণের নাগরিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক অবদান ছিল। আমাদের সন্তানরা সেই আন্দোলন জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে সফল করেছে। ফ্যাসিবাদের যুগের অবসান হয়েছে। একটি জাতীয় ঐক্যের ভিক্তিতে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আসুন অনৈক্য—বিভেদ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী কোনো ভূমিকা না নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য আগস্টের মূল চেতানাকে ধারণ করে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাবো।
বিশেষ অতিথি সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বলেন, তালা উপজেলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ সবার বসবাস। আমরা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসমুক্ত উপজেলা গড়তে চাই। জামায়াতে ইসলামী একটি সার্বজনীন দল। তালার মানুষের উপর আর কাউকে জুলুম করতে দিবে না জনগণ। এর জন্য যা যা করা দরকার জামায়াতে ইসলামী তাই করবে।