মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলী (৬০) নামে এক বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। তিনি চুনারুঘাটের গাজিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ডুলনা গ্রামের মুনছব উল্যার ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় জেরার চুনারুঘাট বাল্লা সীমান্ত দিয়ে মরদেহটি হস্তান্তর করে। খোয়াই বাংলাদেশ-ভারত বাল্লা সীমান্তের দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে।
এর আগে, ৭ জানুয়ারি নিখোঁজের দুইদিন পর ভারত সীমান্তে জহুর আলীর মরদেহ উদ্ধার করে খোয়াই থানা পুলিশ। পেশায় নিরাপত্তা প্রহরী জহুর আলী রাজধানীর বসুন্ধরা এসডিএল কোম্পানি লিমিটেডে কাজ করতেন।
পুলিশ ও নিহতর পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ৪ জানুয়ারি পাঁচদিনের ছুটিতে নিজ বাড়ি পশ্চিম ডুলনা আসেন জহুর আলী। ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা বাড়ি থেকে লুঙ্গি বিক্রির জন্য বের হন। পরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও বাড়িতে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে ৭ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন, ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার গৌড় নগরের খোয়াই নদীতে অজ্ঞাতনামা একটি লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। লাশটি ভারতের খোয়াই টাউন পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খোয়াই টাউন সরকারি হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। পরে স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও নিহতের পরিবারের লোকজনদের ওই অজ্ঞাতনামা লাশের ছবি দেখালে তারা জহুর আলী বলে শনাক্ত করে।
চুনারুঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিজিবি ও বিএসএফ জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে খোয়াই থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শুভঙ্কর দেববর্মা জহুর আলী নামের এক বাংলাদেশির মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তিনি ভারতীয় পুলিশের বরাত দিয়ে আরও বলেন, জহুর আলীর দেহে গুরুতর কোনো জখম নেই। তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। তারপরও পিএম রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে সঠিক নয়। তারা খুবই আন্তরিকভাবে মরদেহ আমাদেরকে হস্তান্তর করেছে।
লাশ হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই থানার অফিসার ইনচার্জ সুবির মালাকার, পুলিশের সাব ডিভিশনাল রঙ্গ দুলাল দেব বর্মা, বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার কুন্দন কুমার, চুনারুঘাট থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুর রহমান, বাল্লা বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার নাজমুল ইসলাম, গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক আব্দুল জাহির মিয়া ও নিহতের ছেলে অলি মিয়াসহ প্রমুখ।