সোহানুর রহমান, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার অধীনস্থ লাইনম্যান'কে দিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার বোয়ালখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোঃ শফিকুল ইসলাম'কে দীঘিনালা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের লাইনম্যান আবু সাইদ (মিন্টু) ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অনৈতিক ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এ দিকে দীঘিনালা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের লাইনম্যান আবু সাইদ (মিন্টু) বলেন, ‘আমি টাকা চায়নি। তাকে অফিসে ডাকতে গিয়েছি। এই মিটার দীঘিনালার সাবেক আবাসিক সহকারী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন স্যার আমাকে দিয়ে লাগিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন তুমি মিটার লাগাও, আমি বুঝবো।’
সরেজমিনে জানাযায়, দীঘিনালা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের অধিনে বোযালখালী গরু বাজার এলাকায় ব্যবসায়ী প্লটের মালিক মোঃ আলমগীর হোসেন। এই দোকানে ভাড়াটিয়া মাসুদুল আলমের নামে দীঘিনালা আবাসিক প্রকৌশলীর অধীনস্থ (০১০৪১০০৫৮৬৬৭) মিটার রয়েছে। মাসুদুল আলম খাগড়াছড়ি জেলা শহরের শব্দ মিয়া পাড়ার বাসিন্দা। সে দীর্ঘদিন ব্যবসা বন্ধ করে অনেক আগেই প্রাবাসে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন। কিন্তু তার নামীয় মিটার প্রত্যাহার করা হয়নি 'পিডিবি' অফিস হতে। কিন্তু গত ১৮ মাস কোন নোটিশ প্রদান না করেই। নতুন ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন প্রকৌশলীর লোকজন।
এ বিষয়ে মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে দীঘিনালা আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলামের কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে অফিসে যেতে খবর পাঠান। টাকা না দেওয়ায় আজ সকালেও আমাকে মামলা দিবেন মর্মে হুমকি ধামকি প্রদান করেন। এই মিটার আমার নামীয় না। আমি এর দায়ভার নিবো কেন? আমি গত বছর থেকেই একাধিকবার তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমার কোন কথা শুনতে রাজি না। মিটার চেঞ্জ করার সুযোগ নেই। এই মিটার বিল দিতে হবে। না হলে বড় বিল তৈরি করে মামলা দিয়ে জেলে ডুকিয়ে দিবো। কোন উপায় না পেয়ে আমি জেনেরেটর ব্যবহার করে দোকান পরিচালনা করে আসছি।
দীঘিনালা আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। বিস্তারিত জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সাথে চড়াও হয়ে উঠেন এই প্রকৌশলী। এক পর্যায়ে শফিকুল ইসলামের নামে একটি জরিমানা বিলের কপি সাংবাদিকদের প্রদর্শন করেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে ৬,১২০ ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ তুলে বাউবো'র ট্যারিফ বিধি এর ১৭.১ শর্ত মোতাবেক ১ লাখ ৬৭ হাজার ২০৪ টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে প্রকৃত মিটার মালিক মাসুদুল আলমকে গত ১৮ মাসে কেন নোটিশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগ কেন জানায়নি বা তাকে কেন জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি জানতে চাইলে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ‘আমাদের সময় হয়নি। আপনারা নিউজ করে কি করতে পারবেন, করেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিক'দের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বলেন ‘শফিকুলের বিরুদ্ধে মামলা রেডি করে পাঠিয়ে দিবো। এখন জেলে যাবে সে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবৈধ সুযোগ কাজে লাগাতে নতুন ভাড়াটিয়া শফিকুলের কাছে একের পর এক হুমকি ধামকি দিয়ে চাঁদা দাবী করে যাচ্ছে আবাসিক প্রকৌশলীর লোকজন।