ঢাকা
১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১১:৫৩
logo
প্রকাশিত : জুন ১৪, ২০২৫

হাসিনাকে রেঁধে খাইয়ে কোটিপতি বাবুর্চি মোশারফ

আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল, সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এমন কথা জোর গলায় বলতে শোনা গিয়েছিল শেখ হাসিনাকে। দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে হাসিনার ছোঁয়ায় ভাগ্য বাদল হয়েছে এমন অনেকেরই। যাদের মধ্যে আছেন তার বাবুর্চি মোশারফ শেখও। নিত্য নতুন রান্না করে ভোজন রসিক হাসিনার মন জয় করে ফন্দি আঁটতেন এই বাবুর্চি। নিজ এলাকা ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় খাদাতেন প্রভাব।

অথচ, দিনমজুর বাবার সন্তান মো. মোশারফ শেখ (৪৭)। নিজের নামটি ঠিকমতো লিখতে পারেন না। বাবার সম্পত্তির ভাগ পেয়েছেন মাত্র ৫ শতাংশ জমি। ৩০ বছর আগে এক হোটেলে বাবুর্চি হিসাবে কাজ শুরু করেন। এর মাত্র দুই বছর পর ভাগ্যক্রমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসার বাবুর্চির কাজ পান। এরপর মোশারফের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার বাসার বাবুর্চির চাকরি পান মোশারফ। তিনি এখন কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক। গ্রামে ও শহরে রয়েছে তার বাড়ি-গাড়ি। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজ গ্রামের প্রতিবেশী কৃষকের জমি দখলসহ সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন বাবুর্চি মোশারফ।

সালথার ভাওয়াল ইউনিয়নের বড় কামদিয়া গ্রামের কৃষক রহমান শেখের ছেলে মোশারফ। তিনি ২৮ বছর হাসিনার বাসার বাবুর্চি ছিলেন। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গা ঢাকা দেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ দিয়েছেন বড় কামদিয়া গ্রামের কৃষক মো. চাঁনমিয়া ফকিরের ছেলে সাগর মিয়া। এরপর থেকে বেরিয়ে আসছে মোশারফের নানা অপকর্ম, নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার-জুলুম ও সম্পদের তথ্য।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে কৃষক চাঁনমিয়া ফকিরের বড় কামদিয়া ৮১ নম্বর মৌজার ৬১৮ নম্বর দাগের ৪৩ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেন মোশারফ। বিভিন্ন সময় ওই জমি ছেড়ে দিতে বললে হুমকি-ধমকি ও মারধর করে চাঁনমিয়া ও তার পরিবারকে এলাকাছাড়া করেন। ১ জুন চাঁনমিয়ার পরিবারের লোকজন জমি উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করলে মোশারফের লোকেরা ফের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

চাঁনমিয়া ফকিরের ভাতিজা সেন্টু ফকির বলেন, আমার চাচা একজন গরিব কৃষক। তার ৪২ শতাংশ জমি দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করেন মোশারফ। ওই ঘরের চালের ওপর একটি নৌকা তৈরি করে টানিয়ে রাখেন। তখন আমরা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে গিয়েও কোনো সমাধান পাইনি। জমি দখল নিয়ে মুখ খুললেই আমাদের মারধর করে এবং মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করতেন মোশারফ। হাসিনার বাবুর্চি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে পুরো কামদিয়ায় সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছেন তিনি।

মোশারফের প্রতিবেশী মো. জামাল শেখ বলেন, হাসিনার বাসার বাবুর্চির চাকরি পাওয়ার পর থেকে যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান মোশারফ। কামদিয়া গ্রামে ২ বিঘা জমির ওপর করেছেন বাড়ি। মাঠেও ৩ বিঘা জমি রয়েছে। ফরিদপুর শহরের হাড়োকান্দি এলাকায় ১২ শতাংশ জমির ওপর একটি বাড়ি এবং রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় ৮ শতাংশ জমির ওপর আরেকটি বাড়ি রয়েছে তার। এছাড়া ঢাকা ও ফরিদপুর শহরে একাধিক ফ্ল্যাট-প্লট ও গাড়ি রয়েছে বলে আমাদের কাছে মোশারফ নিজেই বলেছেন। বর্তমান সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা যদি অনুসন্ধান করে, তাহলে মোশারফের অনেক অজানা তথ্য ও সম্পদের হিসাব বেরিয়ে আসবে। এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বাবুর্চি মোশারফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, জমি দখলের বিষয় নিয়ে মোশারফের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram