ঢাকা
৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:৩৫
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ৩১, ২০২৫

সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবিত জায়গায় নির্মাণের দাবি

সোহেল তালুকদার, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবিত জায়গায় ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে শান্তিগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১১টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে, সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধিকা রঞ্জন তালুকদারের সভাপতিত্বে, সাধারণ শিক্ষার্থী তানভীর হাসান মারুফ’র সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, সুনামগঞ্জ জেলার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনছার উদ্দিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলম, শান্তিগঞ্জ উপজেলা জামায়তে ইসলাম’র আমির হাফিজ আবু খালেদ। সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন, সাধারণ শিক্ষার্থী হাম্মাদ আজাদ রহিম।

সংবাদ সম্মেলনে, সুনামগঞ্জ জেলার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ বলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকার ইতোমধ্যে অনেক টাকা খরচ করেছেন। এটা একটি মীমাংসিত প্রকল্প, এটি নিয়ে আগে অনেক কথা হয়েছে। সরকার সবার কথা মাথায় রেখে পুরো সুনামগঞ্জ জেলার মানুষের সুবিধাজনক স্থানেই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের জন্য জায়গা নির্বাচন করেছেন। এখন হঠাৎ করে, আমার সুনামগঞ্জ শহরের কিছু বন্ধুরা মীমাংসিত ঘটনাকে আবার আলোচনায় নিয়ে এসেছেন। আমি মনে করি আপনার সুনামগঞ্জ জেলার মানুষের কথা চিন্তা না করে, আপনাদের নিজেদের লাভের চিন্তা করছেন, দয়া করে আপনারা এই খেলা বন্ধ করুণ।

তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা একটি পিছিয়ে পড়া জেলা। আমরা শিক্ষায় পিছিয়ে, স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে, যোগাযোগে অনেক পিছিয়ে আছি। সরকার এই পিছিয়ে পড়া জেলাকে এগিয়ে নিতে আমাদের টাকায় সুনামগঞ্জে মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করছেন। যুতি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে নির্মাণ হয়েছে আগামী ৫০ বছরের জন্য পরিকল্পনা করেই এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে ও হচ্ছে। আপনারা দয়া করে আপনাদের স্বার্থে নতুন করে জেলার উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করবেন না। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা একটি আলোকিত জনপদ হবে। আমাদের সুনামগঞ্জ শহর আরো প্রসারীত হবে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা বলি, সুনামগঞ্জ শহর হচ্ছে, জ্বল-জোৎনার শহর, কিন্তু সুনামগঞ্জ শহরের আপনার যদি এই বিশ্ববিদ্যালটি স্থাপন করেন, তাহলেতো আপনার আর এই শহরকে জ্বল-জোৎনার শহর বলতে পারবেন না। আপনার আপনাদের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন, নতুন করে যধি আপনার আরো কোন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আসতে পারেন, আমরা আপনাদের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। কিন্তু আমাদের সবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না।

সুনামগঞ্জ জেলার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আনছার উদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা শহর একটি ছোট্ট শহর, আমাদের শহরকে আরো প্রসারীত করতে হবে। এমনিতেই এই শহরে যানজট লেগেই থাকে। দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই শহরকেন্দ্রীক নয়, সেগুলো নিমার্ণ করা হয়েছে, শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে, এখন সেগুলোগে কেন্দ্রকরে হয়তো শহরায়ন হয়েছে। তাই আমাদের সুনামগঞ্জ শহরকে এই বিশ্ববিদ্যালয় আরো প্রসারীত করবে। যে খানে বিশ্ববিদ্যালয়টি হচ্ছে, সেখানে প্রচুর পরিমানে সরকারের খাস জমি রয়েছে, কিছু মালিকানা যায়গা আছে, তবে দাম অনেক কম, তাই এই জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন হলে, পুরো জেলার মানুষের যেমন সুবিধা হবে, তেমনি সরকারের টাকারও সাশ্রয় হবে। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্ধারিত জায়গায় বিশ্ববিদ্যালটির ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলম বলেন, আমাদের কলিজায় হাত দিবেন না! আমরা শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ছাতকের মানুষ বসে থাকবো না! প্রয়োজনে পুরো ১২টি উপজেলার মানুষকে নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালটি রক্ষা করবো। আমরা আন্দোলন করতে জানি। আমাদেরকে ভয় দেখাবেন না। ছাত্র আন্দোলনে সর্ব প্রথম আমরাই দেশে রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করেছিলাম। প্রয়োজনে তাই করবো। আমাদের পুরো জেলার সুবিধাজনক স্থানেই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন হচ্ছে, এখান আপনারা বানিজ্য ও নিজেদের স্বার্থে আপনারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালটি শহরের ভেতরে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। যেখানে নির্মাণ হচ্ছে, সেখানেতো একক কোন ব্যাক্তির স্বার্থ হাছিল হচ্ছে না। কিন্তু আপনারা গুটি কয়েকজন মানুষ আমাদের স্বপ্নের লালিত ফসলকে কেড়ে নিতে মড়িয়া হয়ে উঠেছেন। সেটা জেলার কোন মানুষই সহ্য করবে না। প্রয়োজনে আমাদের বোকের রক্ত দেব। আরো বড় আন্দোলনের ডাক দেব।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা জামায়তে ইসলাম’র আমির হাফিজ আবু খালেদ বলেন, আমরা মনে করি এখানে একটি চক্র নিজেদের স্বার্থেই সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন। তা না হলে পুরো জেলার মানুষের কথা চিন্তা না করে যে যে জায়গায় তারা নতুন করে প্রস্তাব দিছেন। আমাদের অবহেলিত পুরো সুনামগঞ্জ জেলার স্বপ্নের উন্নয়নকে আপনারা বাঁধাগ্রস্ত করবেন না। যে খানে নির্মাণ করা হচ্ছে সে জায়গাটি জেলার মিডিল পয়েন্ট। সবার যোগাযোগের সহজ জায়গা। সরকারের কাছে আমাদের দাবি প্রস্তাবিত জায়গায় যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি দ্রুত নির্মাণ করা হয়।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে শিক্ষার্থী হাম্মাদ আজাদ রহিম তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আমাদেরকে সার্বিক বিষয়টি চিন্তা করতে হবে। আপনার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যাল কিনংবা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা যদি চিন্তা করেন, দেখবেন, সেগুলোর নিমার্ণ করা হয়েছে শহরের বাহিরে, মানুষের কোলাহল মুক্ত জায়গায়। আবার কোন বিশ্ববিদ্যালই ভারতের বর্ডার গেষে নির্মাণ করা হয়নি। তাহলে আমাদের সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালটি সঠকি জায়গায় সবার সুবিধা ও আগামী ৫০ বছরের পরিকল্পনা করেই নির্মাণ করা হচ্ছে। এখন নতুন করে সুনামগঞ্জে কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ নিজেদের স্বার্থে এই বিশ্ববিদ্যালটি সরিয়ে ভারতের কাছে নিয়ে স্থাপন করতে চাইছেন। সেটা কেন, আমাদের বুঝতে হবে। আপনাদের এতো ইন্ডিয়াপ্রীতি কেন? ইন্ডিয়া আমাদের কোন কালে, কোন সময়ই বন্ধু ছিল না, তাহলে আপনার কেন আমাদের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালটি সরিয়ে ভারতের কাছাকাছি নিয়ে স্থাপন করতে চাচ্ছেন? আমার সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করি, খুব দ্রুত সময়েই আপনার আপনাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে জনমানুষের আকাঙ্খার উন্নয়নটি দ্রুত গতিতে বাস্তবায়নের লক্ষে আমাদের সবাইকে সহযোগিতা করবেন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি বিশ্ববিদ্যালটি যেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রস্তাবিত জায়গায় ক্যাম্পাস নির্মাণের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুর আলী, উপজেলা বিএনপি নেতা ইরান উদ্দিন, ইলিয়াছ মিয়া, আবুল কালাম, সৈয়দ আলম, লিটন মিয়া, উপজেলা জমিয়ত নেতা মাও. হোসাইন আহমদ, মাও. আব্দুল হাফিজ, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের আমিন উদ্দিন, আপন আহমদ, তামিম আহমদ, লিটন মিয়া, নাসিম আহমদ, হাফিজুর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ প্রমুখ।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram