সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি স্ক্যানিং মেশিন (ইডিএস) থাকলেও সেগুলো তেমন একটা কাজে আসছে না। একটি মেশিন গত বছরের ২৭ এপ্রিল থেকে অচল, অপরটি সচল থাকলেও তাতে মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্যসহ সন্দেহজনক বস্তু শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না, ‘দৃষ্টিহীন’। সেই অর্থে দুটি মেশিনই যেন শোপিস হয়ে আছে। এতে এই বিমানবন্দর দিয়ে চোরাচালানের অবাধ সুযোগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকিরও শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, কার্গো স্টেশনের স্ক্যানিং মেশিনের কাজ হচ্ছে কোনো পণ্যের চালানের মধ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্য অথবা সন্দেহজনক বস্তু আছে কিনা, তা শনাক্ত করা। মেশিনের মনিটরে পণ্যের ইমেজ দেখা যায়। কিন্তু বর্তমানে সচল মেশিনটি তা করতে পারছে না। আবার স্ক্যানারের মনিটরেও কিছু প্রদর্শিত হয় না। এ অবস্থায় ইডিএস মেশিনটি যেকোনো পণ্যের চালান বেল্টের মাধ্যমে ডাইভার্ট করে ম্যানুয়াল পরীক্ষার জন্য ব্যাগ সার্চারে পাঠিয়ে দেয়। ইডিএস স্ক্যানার আগে থেকে স্ক্যানিং ইমেজ সম্পর্কে কোনো তথ্য না জানায় ব্যাগ সার্চারকে তথ্য দিতে পারে না। ফলে পণ্যের চালানে কোনো নিষিদ্ধ বস্তু থাকলে তা খুলে ম্যানুয়াল পরীক্ষা করতে হয় স্ক্যানিং অপারেটরদের। এ অবস্থায় অপারেটরদের একরকম ভীতির মধ্যে পণ্য চালান পরীক্ষা করতে হয়।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলেন, স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট থাকায় সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে চোরাচালানের সুযোগ অবারিত হয়েছে। প্রতিদিনই স্বর্ণসহ নিষিদ্ধ বস্তু চোরাচালান হচ্ছে। এক শ্রেণির কর্মকর্তা এর অবৈধ সুযোগ নিচ্ছেন। আবার কর্তৃপক্ষ মেশিন অচলের বিষয়ে অবগত থাকলেও অজানা কারণে তড়িৎ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ নিয়েও বড় প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমোডর মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান খান গত ২০ জানুয়ারি এক চিঠিতে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্টের (সেমসু) নির্বাহী পরিচালককে (সেমসু) বিষয়টি উল্লেখ করে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে নিরাপত্তা কার্যক্রমে ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কথা জানান। চিঠিতে অচল স্ক্যানিং মেশিনটি দ্রুত সচল এবং অটোমোডে পরিচালিত মেশিনটি
স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর-এসওপি অনুযায়ী মনিটরে ইমেজ প্রদর্শনের জন্য ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।
এ বিষয়ে বেবিচকের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট (সেমসু) ইউনিটের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিনের বিষয়ে বেবিচক সদর দপ্তর থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।