ঢাকা
১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৭:৪৮
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ২২, ২০২৫

ইসলামে শপথ করার বিধান

নিজের দাবি ও কথাবার্তা অন্যের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে মানুষ প্রায়ই শপথ করে। ইসলামের দৃষ্টিতে শপথ হতে হবে আল্লাহ তাআলার নামে। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করা নিষিদ্ধ ও মারাত্মক গুনাহের কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন শপথকে ‘শিরক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করল, সে শিরক করল।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৫৩৫)

তবে বিনা প্রয়োজনে শপথ না করা উত্তম। তবু যদি কোনো কারণে করতেই হয়, তাহলে তা হতে হবে কেবল আল্লাহর নামে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের নিজেদের বাপ-দাদার নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন।

যদি কারো শপথ করতেই হয়, তবে সে যেন আল্লাহর নামেই শপথ করে, নচেৎ চুপ থাকে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪০১)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা নিজেদের বাপ-দাদা, মা-নানি ও প্রতিমাদের নামে শপথ কোরো না। তোমরা সত্যবাদী হলে কেবল আল্লাহর নামে শপথ করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২৪৮)

শপথের পর করণীয় : ভবিষ্যতের কোনো কাজের বিষয়ে শপথ করার পর কোনো কারণে যদি শপথ ভাঙতে হয়, তাহলে শপথের কাফফারা (শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত কাজের মাধ্যমে শপথের প্রায়শ্চিত্ত করার নাম কাফফারা) দিতে হবে।

অর্থাৎ যে ক্ষেত্রে শপথ ভঙ্গ করা জরুরি অথবা উত্তম বিবেচিত হয়, আল্লাহ তাআলা সে ক্ষেত্রে শপথ ভঙ্গ করে কাফফারা আদায় করার ব্যবস্থা রেখেছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য শপথ থেকে অব্যাহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ২)

আবদুর রহমান ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, হে আব্দুর রহমান ইবনে সামুরা! যদি তুমি কখনো শপথ করো এবং পরে এর বিপরীত কাজ উত্তম মনে করো, তবে এর কাফফারা আদায় করবে এবং যেটি উত্তম কাজ তা করবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭২২)

কাফফারা দেওয়ার পদ্ধতি : শপথ ভঙ্গ করার কাফফারা চারভাবে দেওয়া যায়—

এক. ১০ জন দরিদ্র ব্যক্তিকে মধ্যম শ্রেণির খাদ্য সকাল-বিকাল দুই বেলা খাওয়াতে হবে।

দুই. ১০ জন দরিদ্রকে সতর ঢাকা পরিমাণ পোশাক-পরিচ্ছদ দিতে হবে।

উদাহরণত একটা পায়জামা অথবা একটা লুঙ্গি কিংবা একটা লম্বা চাদর প্রভৃতি।
তিন. একজন দাস মুক্ত করতে হবে। বর্তমান সময়ে দাসপ্রথা না থাকায় এ পদ্ধতিতে কাফফারা প্রদান আপাতত সম্ভব নয়।

চার. যদি শপথ ভঙ্গকারী উল্লিখিত তিনটি আর্থিক কাফফারা দিতে না পারে, তাহলে ধারাবাহিক তিনটি রোজা রাখবে।

(সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৮৯)

শপথ করা কোনো খেল-তামাশার বিষয় না। এ জন্য প্রথমত চেষ্টা থাকবে, শপথ যত কম করা যায়। বিশেষ প্রয়োজনে শপথ যদি করতেই হয়, তাহলে তা পূরণে যথাসাধ্য সচেষ্ট হতে হবে।‌ তবু যদি কোনো কারণে শপথ ভঙ্গ করতে হয়, তাহলে উপর্যুক্ত কাফফারা আদায় করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের অহেতুক কাজকর্ম, অপ্রয়োজনীয় শপথগ্রহণ থেকে বিরত থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram