ঢাকা
৪ঠা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৮:১১
logo
প্রকাশিত : এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ব্যর্থতার বৃত্তে মানুষের আটকে থাকার কারণ

মুমিনের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হলো, মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে তাঁর ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করা। যেহেতু আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি মানুষ ও জিন জাতিকে আমার উপাসনা করার জন্যই সৃষ্টি করেছি।’

(সুরা : জারিয়াত, আয়াত : ৫৬)

আল্লাহ যেহেতু আমাদের তাঁর ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন, আমাদের উচিত ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনকেই জীবনের লক্ষ্য বানিয়ে নেওয়া। তাঁর প্রতিটি আদেশ-নিষেধ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করা।

তাঁর অফুরন্ত নিয়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপন করা এবং তাঁর ওপর অগাধ বিশ্বাস স্থাপন করা।

মুমিন যখন তার এই লক্ষ্য ভুলে গিয়ে নাফরমানি শুরু করে, আল্লাহর অগণিত নিয়ামত ভোগ করেও তার ওপর আস্থা রাখতে পারে না, তখনই তার ওপর নেমে আসে ব্যর্থতার আজাব। কিছু লোক সব পেয়েও ব্যর্থ হয়। মুক্ত বাতাসে থেকে ব্যর্থতার জিঞ্জিরে বন্দি হয়। যেমনটি হয়েছিল বনি ইসরাঈলের সঙ্গে।

ঘটনাটি মুসা (আ.)-এর যুগের। ফেরাউন ও তার সৈন্যবাহিনী যখন সমুদ্রে নিমজ্জিত হয় এবং মুসা (আ.) ও তাঁর সম্প্রদায় বনি ইসরাঈল ফেরাউনের দাসত্ব থেকে মুক্তিলাভ করে, তখন মহান আল্লাহ তাদের কিছু নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন এবং তাদের পৈতৃক দেশ শামকেও তাদের অধিকারে প্রত্যার্পণ করতে চাইলেন। সে মতে মুসা (আ.)-এর মাধ্যমে তাদের যুদ্ধের উদ্দেশ্যে পবিত্র ভূমি শাম (বর্তমান সিরিয়া, ফিলিস্তিন তথা বাইতুল মুকাদ্দাস) এলাকায় প্রবেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে আগাম সুসংবাদও দেওয়া হলো যে এ যুদ্ধে তারাই বিজয়ী হবে। কারণ আল্লাহ তাআলা এই পবিত্র ভূমির আধিপত্য তাদের ভাগ্যে লিখে দিয়েছেন, যা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।

কিন্তু বনি ইসরাঈল প্রকৃতিগত বক্রতার কারণে আল্লাহর সরাসরি সাহায্যে ফেরাউনের সাগরডুবি, তাদের মিসর অধিকার ইত্যাদি স্বচক্ষে দেখেও এ ক্ষেত্রে অঙ্গীকার পালনের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে সক্ষম হলো না। তারা যুদ্ধ সম্পর্কিত আল্লাহ তাআলার নির্দেশের বিরুদ্ধে অন্যায় জেদ ধরে বসে রইল। তারা মহান আল্লাহকে ভয় না করে সামান্য কিছু মানুষকে ভয় করল।

তারা বলল, ‘হে মুসা, তারা যতক্ষণ সেখানে থাকবে ততক্ষণ আমরা সেখানে কখনো প্রবেশ করব না; কাজেই তুমি আর তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ করো। নিশ্চয়ই আমরা এখানেই বসে থাকব।’

(সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২২-২৪)

পরিণতিতে মহান আল্লাহ তাদের শাস্তি দিতে বাধ্য হলেন, তারা ৪০ বছর পর্যন্ত একটি সীমাবদ্ধ এলাকায় অবরুদ্ধ ও বন্দি হয়ে রইল। বাহ্যত তাদের চারপাশে কোনো বাধার প্রাচীর ছিল না এবং তাদের হাত-পা শিকলে বাঁধা ছিল না; বরং তারা ছিল উন্মুক্ত প্রান্তরে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাদের সেই শাস্তির বর্ণনাও স্পষ্টভাবে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, তিনি (মুসা) বলেন, হে আমার রব! আমি ও আমার ভাই ছাড়া আর কারো ওপর আমার অধিকার নেই, সুতরাং আপনি আমাদের ও ফাসিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিন। তিনি (আল্লাহ) বলেন, ‘যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়েছিল যে তারা ৪০ বছর ধরে দিন-রাত সকাল সন্ধ্যা তীহ ময়দানে উদ্দেশ্যহীনভাবে ভবঘুরে জীবন যাপন করবে।’

(সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২৫-২৬)

এভাবেই যারা মহান আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত ভোগ করেও তাঁর ওপর আস্থা রাখে না, তাদের জীবন ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে যায়। তারা পরকাল তো পায়ই না, দুনিয়াও তাদের জন্য বিশাদের হয়।

হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদম সন্তান, তুমি আমার ইবাদতের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করো, আমি তোমার অন্তর ঐশ্বর্যে পূর্ণ করে দেব এবং তোমার অভাব দূর করে দেব। তুমি তা না করলে আমি তোমার দুই হাত কর্মব্যস্ততায় পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার অভাব-অনটন রহিত করব না।’

(তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬৬)

অতএব, আমাদের উচিত আমাদের মূল লক্ষ্য ভুলে না যাওয়া। সর্বাবস্থায় আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেওয়া।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram