ইপসিতা জাহান সুমা, চুয়েট প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর স্থাপত্য বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো "1st National Conference on Resilient Architecture Towards Sustainable Bangladesh (NCRATSB-2024)”। স্থাপত্য বিদ্যা (Architecture) হল একটি শিল্প ও বিজ্ঞান যা ভবন এবং অন্যান্য স্থাপত্যসমূহের নকশা,পরিকল্পনা, নির্মাণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এটি হলো স্থপতিদের সৃজনশীলতা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার সমন্বয়,যা পরিবেশের সাথে সঙ্গতি রেখে টেকসই বাসস্থান,কর্মক্ষেত্র, এবং অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য উপযোগী স্থান তৈরি করে।
১৮ই ডিসেম্বর (বুধবার) চুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত হয় একদিনব্যাপি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের আহ্বায়ক ও স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.সজল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনের সহ আহ্বায়ক ছিলেন স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব রিজওয়ানা ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন স্থাপত্য বিভাগের প্রভাষক জনাব সাদিয়া ইবনাত রাইছা।
একদিনের এই জাতীয় সম্মেলনে ৫০ টির অধিক গবেষনাপত্র থেকে বাছাই করে ১৫ টি গবেষণারপত্র সম্মেলনের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। মোট দুইটি সেশনে এই গবেষণাপত্রসমূহ উপস্থাপন করা হয়েছে ।এছাড়াও ৪টি মূল প্রবন্ধ ও আমন্ত্রিত প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। পাশাপাশি এই সম্মেলনে ছিলো অনেকগুলো স্থাপত্যকর্মের প্রদর্শনির ব্যবস্থা। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন হিসেবে ছিলেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার সাব্বির আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ডিজাইন এর ডীন অধ্যাপক ড.আবু সায়েদ মোঃ আহমেদ,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি বিভাগের অধ্যাপক ড.মোঃ আখতার মাহমুদ ও ব্রাক এর ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রামের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাপস রঞ্জন চক্রবর্তী এবং আমন্ত্রিত প্রবন্ধ উপস্থাপন হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড.মোঃ আশিকুর রহমান জোয়ার্দার।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে অনলাইনে ভার্চুয়াল ভাবে যুক্ত হয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে গবেষণা এবং উদ্ভাবনী সমাধানগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে,বিশেষত টেকসই উন্নয়নে। বর্তমান সময়ে স্থাপত্যের ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, জ্বালানি দক্ষতা, এবং পরিবেশগত সামঞ্জস্যতা আমাদের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।তিনি টেকসই স্থাপত্য চর্চার সম্পর্কে আরো যোগ করে বলেন, “বাংলাদেশের স্থাপত্য খাতের অগ্রগতি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এছাড়াও সম্মেলনে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া তার বক্তব্যে বলেন,প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকার,বিশেষত আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে,স্থাপত্যখাতে উদ্ভাবনী সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে দেশের স্থাপত্য খাতকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতার যোগ্য করে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। তিনি বলেন, “নগরায়ণের প্রভাবে আমাদের পরিবেশ ও স্থাপত্যের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের স্থাপত্যের ক্ষেত্রে পরিবেশগত এবং সামাজিক দায়িত্বের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
উল্লেখ্য,স্থাপত্য বিভাগের ১ম জাতীয় সম্মেলনে চুয়েট,বুয়েট,রুয়েট,কুয়েট,খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,ব্রাক ইউনিভার্সিটি,জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় একাডেমিশিয়ান, স্কলার্স ও গবেষকগন অংশ নেন।