চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী-নাটোর হয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী দূরপাল্লার বাস আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিকপক্ষ। শ্রমিকরা খোরাকি ভাতার দাবিতে বাস যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠানোর অভিযোগে বাস বন্ধ করে দেন মালিকরা।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বজলুর রহমান রতন এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে শুধু একতা ট্রান্সপোর্ট ও লোকাল বাসগুলো চলাচল করছে। অন্য সব পরিবহনের বাস বন্ধ রয়েছে।
এর আগে চলতি মাসেই বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে দুই দফা বাস বন্ধ করে দেন চালক, হেলপার ও সুপারভাইজাররা। মালিকপক্ষের দাবি, শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা অযৌক্তিক দাবি সামনে আনছেন, যা মেনে নেওয়া সম্ভব না। শ্রমিকদের সঙ্গে না পেরে তারা নিজেরাই এবার বাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বজলুর রহমান রতন জানান, শমিকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে গত মঙ্গলবার ঢাকায় তাদের সঙ্গে বসা হয়েছিল। তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সভা সুন্দরভাবেই শেষ হয়। এরপর বাস চলাচলও শুরু হয়।
তিনি বলেন, এখন শ্রমিকরা দূরপাল্লার বাস যেখানে-সেখানে থামিয়ে যাত্রী তুলতে চাচ্ছে। খোরাকি ভাতা দাবি করছে। যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী তুললে তো ব্যবসা করা যাবে না। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে নতুন করে বিরোধ। তারা বাস চালাবে না বলেছে। আমরাও বলেছি- ঠিক আছে, এভাবে বাস চালাতে চাই না। কয়দিন বসে থাকবে থাকুক।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংক লরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ঢাকায় বাস মালিকদের সাথে শ্রমিক নেতাদের বৈঠক সন্তোষজনকভাবে শেষ হয় এবং ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগেই একতরফাভাবে বাস বন্ধ করে দিয়েছে। যত্রতত্র বাস দাঁড়ানোর বিষয়টি সত্য নয়। যাত্রী যেখানে নামতে চায়, শুধু সেখানেই নামানো হয়। দুয়েকজন যাত্রী উঠানো হলেও মালিকপক্ষকে তার হিসাব জমা দেওয়া হয়।
এর আগে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে তিন জেলা থেকে দূরপাল্লার বাস চালানো বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। দুইদিন পর মালিকপক্ষের আশ্বাসে তারা ফের বাস চালানো শুরু করেন। কিন্তু আশ্বাস অনুযায়ী বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা না হলে ২২ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ফের কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত একতা ছাড়া বাকি সব বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
একদিন পর ফের বাস বন্ধ হয়ে গেল। এতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারসহ দূরের গন্তব্যের যাত্রীরা ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।