ঢাকা
৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ১০:২৯
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২, ২০২৫

হেলে পড়া হল নয়, টিকে থাকার লড়াই; আবাসন সংকটে দিশেহারা রাবির অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা

আবু হেনা সাকিল, রাবি প্রতিনিধি: ভূমিকম্পে হেলে পড়া শেরে বাংলা হলের ঝুঁকি শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে প্রশাসনকে। কিন্তু হলের দেয়ালে ফাটলের চেয়ে বড় সংকট যেন আঘাত করেছে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রায়। বাসা ভাড়া, নিরাপত্তাহীনতা ও ক্রমবর্ধমান খরচের চাপ তাদের টিকে থাকার লড়াইকে আরও জটিল করে তুলেছে। সেই হতাশায় কেউ কেউ ঝুঁকিপূর্ণ হলেও খালি পড়ে থাকা হলেই থাকতে চাইছেন।

সমাজকর্ম বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী মো. আতিক বলেন, “হেলানো ভবনে থাকা নিশ্চয়ই নিরাপদ নয় কিন্তু বাইরে থাকা আরও কঠিন। প্রতিদিন বাসা ভাড়ার চাপ, খাবারের খরচ—সব মিলিয়ে মাঝেমধ্যেই মনে হয় হলেই থাকি। জীবন যদি যাপনই না করা যায়, নিরাপত্তার দায় আমার নিজেরই।”

তিনি জানান, মধ্যবিত্ত পরিবারে পড়াশোনা চালানো আজ ‘নিরাপত্তা’ ও ‘সাশ্রয়ের’ মাঝে কঠিন সমীকরণ।

ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. লতিফুর রহমান বলেন, “আবাসন সংকট দূর করার প্রতিশ্রুতি আমরা শুনেছি। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে এসব প্রতিশ্রুতি শুধুই নির্বাচনী বুলি ছিল। আমাদের মতো পরিবারের ছেলেরা মেস ভাড়া টিকিয়ে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে।”

অন্যদিকে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আম্মার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ঝুঁকিপূর্ণ হলে শিক্ষার্থীদের রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “যেখানে ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে কাউকে থাকার অনুমতি দিলে দুর্ঘটনার দায়ভার আমাদের ওপরই আসবে। বিকল্প সমাধান খুঁজতে হবে।”তিনি প্রশাসনকে মেস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ভাড়ায় নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও ন্যূনতম সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

শেরে বাংলা হল প্রভোস্ট মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, যেখানে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদেরকে সরিয়ে নিচ্ছি। সেখানে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থান থেকে এনে এই ঝুঁকির মধ্যে রাখা কখনোই শোভা পায় না। আমরা তো তাদের অভিভাবক। সুতরাং আমরা কখনোই তাদের জীবনের ঝুঁকি নিতে পারবো না।

তিনি আর‌ও বলেন, আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের সেই দিন‌ই সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তৎপর হই। কিন্তু নতুন হলে পড়ালেখার উপযোগী পরিবেশ না থাকায় কেউ কেউ এখনো পুরাতন হলে রয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনার দ্বায়ভার প্রশাসন নিবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ১০ হাজারের মতো—মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩৮ শতাংশ। ফলে হেলে পড়া হল কেবলই একদিনের দুর্ঘটনা নয়; এটি রাবির দীর্ঘমেয়াদি আবাসন সংকটের গভীরতা আরও স্পষ্ট করেছে।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram