ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: প্রায় ২ ঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদে অবরুদ্ধের পর তিন ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও আওয়ামী লীগ নেতাকে থানা পুলিশে সোপর্দ করেছে সাধারণ জনতা। রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা একরাম হোসেন জানান, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের তিন ইউপি সদস্য ফিরোজ হোসেন বাকি (৫৭), আলাউদ্দিন খান (৫০) ও রফিকুল ইসলাম মাঝি (৪৫) দীর্ঘদিন পর পরিষদের কার্যালয়ে যান। তারা তিনজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের পরিষদের কার্যালয়ে আসার খবর পেয়ে এলাকাবাসী আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে দুপুর ২টার দিকে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ই আগস্টের পর শেখ হাসিনা সরকার পলায়নের পর থেকেই এই ৩ মেম্বার ইউনিয়ন পরিষদে আসতেন না। এরপর তাদের দাপ্তরিক কাজে সমস্যা হওয়ার কারনে তারা আজ দুপুর ১২ ঘটিকার দিকে দাশুড়িয়া বাজার এলাকায় অবস্থিত তাদের ইউনিয়ন পরিষদে একসঙ্গে হাজির হন। এসময় তাদের উপস্থিতি সাধারণ জনগণের নজরে আসলে তারা পরিষদে একত্রিত হতে থাকেন। এবং তাদের পরিষদের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবরুদ্ধের প্রায় ২ ঘন্টা পর ঈশ্বরদী থানা পুলিশে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানায় নিয়ে যান।
ফিরোজ হোসেন বাকি দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওর্য়াডের ইউপি সদস্য ও নওদাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ মাস্টারের ছেলে। তিনি দাশুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আলাউদ্দিন খান ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়নের খালিশপুর গ্রামের নবাব আলী খানের ছেলে। তিনি দাশুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এবং রফিকুল ইসলাম মাঝি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও মারমী গ্রামের সিরাজ মাঝির ছেলে। তিনি ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য।
দাশুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুলভ মালিথা বলেন, এই তিন ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলবদ্ধভাবে পরিষদে যান। তারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। এছাড়া সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেছে। তারা পরিষদে এসেছেন শুনে স্থানীয় জনতা তাদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
ইউপি সদস্য ফিরোজ হোসেন বাকির ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। তিনজনই আদালত থেকে জামিনে মুক্ত। ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালনে তারা গিয়েছিলেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের অপমান করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, তিন ইউপি সদস্যকে স্থানীয় লোকজন ইউনিয়ন কার্যালয়ে আটকে রেখেছিল। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।