মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে অপারেশন বন্ধ, বাক্সবন্দি এক্সরে মেশিন, ৩দিন ধরে হাসপাতালে নেই পানি, জনবল সংকট, আল্ট্রাসনোগ্রাফী চিকিৎসক সংকট সহ নানাবিধ সমস্যা নিয়ে জনস্বার্থে একাধিক প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম।
বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান না খুঁজে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় উল্টো মিথ্যা চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে দৈনিক জনকন্ঠের প্রতিনিধি গনেশ পাল, দৈনিক ভোরের দর্পণ প্রতিনিধি শামীম আহসান মল্লিক, দৈনিক পূর্বাঞ্চল প্রতিনিধি এম. পলাশ শরীফ ও দৈনিক ইনকিলাব প্রতিনিধি মেজবা ফাহাদের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
বাগেরহাট বিজ্ঞ জজ আদালতের সিনিয়র এ্যাডভোকেট মুস্তাইন বিল্লাহ স্বাক্ষরিত গত ২১ এপ্রিল প্রাপ্ত এক লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে বলা হয়েছে, মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম ও হাসপাতালের প্রধান সহকারী মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেনের নিকট সাংবাদিকতার অজুহাতে তাদের নিকট ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। তারা টাকা না দেওয়ার কারণে গত ৬ এপ্রিল/২৫ তারিখে বিভিন্ন পত্রিকায় অসত্য সংবাদ প্রকাশ করেন।
এ লিগ্যাল নোটিশে ৩ দিনের মাথায় উক্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্বারক নং-উস্বাক/ মোরেল/বাগের/২০২৫/১৯৫, তরিখ-২৩/৪/২০২৫ইং মোরেলগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি বরাবরে আরও একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেন্দ্র করে ইদানিং কতিপয় সাংবাদিক অসত্য, বিভ্রান্তিকর উস্কানিমূলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাচ্ছেন। এ কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুনাম ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।
এদিকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ এনে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান ও প্রেসক্লাবে চিঠি প্রেরণ করায় যা যথারিতি গণমাধ্যম কর্মীদেরকে হতবাক করেছে। সংবাদপত্রের বাক স্বাধীনতা হরণ করা ও নগ্ন হস্তক্ষেপের সামিল। স্বাধীন মত প্রকাশের বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। উচ্চ পর্যায়ের একজন দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়েও এ ধরনের অভিযোগ কতটুকু সমীচীন হয়েছে তা নিয়ে সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্নের।
৫০ শয্যা এ হাসপাতালটি এ উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে অপারেশন থিয়েটারে সাড়ে তিন বছর ধরে সকল প্রকার অপারেশন কার্যক্রম এখনও বন্ধ রয়েছে। নতুন এক্সরে মেশিনটি সরকারের অনেক অর্থ ব্যয়ে বরাদ্দ হলেও এখনও রয়েছে বাক্সবন্দি অবস্থায়। আল্ট্রাসনো হচ্ছেনা, হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত পানি স্লাপ্লাইয়ের মটর নষ্ট থাকায় ৩ দিন পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে রোগীদের। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও বৃদ্ধমান সমস্যাগুলো এখনও দৃশ্যমান রয়েছে।
এ সম্পর্কে বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মাহাবুবুল আলম বলেন, মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের, সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে সাংবাদিকদের লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে তিনি অবহিত নন। সরকারি চাকুরিজীবিদের আইনি প্রক্রিয়ায় এসব ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে কিনা তা আমার ভাল জানা নেই।