এম.পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।
চলতি বছরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ১১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। এলাকার সৌখিন চাষিরা পতিত জমিতে এ সূর্যমুখীর চাষ করে থাকে। সূর্যমুখীর চাষে স্বল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়া যায়। যার কারণে সূর্যমুখী চাষে কৃষকের সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে বাজারজাত করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। রোপণের ৩ মাসের মধ্যে পরিপক্ব সূর্য্যমুখী ঘরে উঠানো সম্ভব।
সরেজমিন ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভাইজোড়া কাঠালতলা ও বিশারীঘাটা গ্রামের শতাধিক কৃষক এবার ২০ হেক্টর ফসলি জমিতে দেশি আমন ধান ঘরে তোলার পরে পতিত জমিতে সূর্য্যমুখী চাষ করে। সদর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রহিম হাওলাদার জানান, তিনি চলতি বছরে ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ৭-৮ মণ ফসল পেতে পারেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রতিমণ বীজ ৪ হাজার টাকা। দাম হবে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। যা পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন। চাষী সোহরাব হোসেন জানান, তিনি এবছরে ৩ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ ফলন পাবেন বলে আশাবাদী।
সৌখিন চাষী আব্দুর রব বলেন, কোলেষ্টেরল মুক্ত নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত সূর্যমুখীর তেল। নিজেদের সংসারের চাহিদা মিটিয়েও বাজারে বিক্রয় করতে পারবেন। এতে করে স্বল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। স্থানীয় কৃষকদের দাবি এ ফসলের বীজ ভাঙ্গানোর পরে অবশিষ্ট ফল গাছের ছাবরা দিয়ে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে জ্বালানী চাহিদা অনেকটা মিটানো সম্ভব। তবে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতা পেলে বায়োগ্যাস উৎপাদনও বৃদ্ধি করতে পারবে কৃষকরা। পাশাপাশিও তারা সরকারি সহযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি জানান।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন বলেন, কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের আধুনিক প্রশিক্ষণ ও প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। যার ফলে দেশী আমন ফসল ঘরে তোলার পরে পতিত জমিতে নতুন নতুন একাধিক ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এ ভালো ফসল দেখে আগামীতে কৃষকদের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় এ বছর ১১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ২০ হেক্টর। এছাড়াও খাউলিয়া, বনগ্রাম, বলইবুনিয়া, হোগলাপাশা, চিংড়াখালী ও হোগলাবুনিয়ায় এ ফসল উৎপাদন করেছেন কৃষকেরা। উচ্চমানের এ ভালো ফলনে এবং বাজার দর ভাল থাকার কারণে আগামীতে এ সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।