ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় চিকিৎসক ও জনবল সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। যার কারণে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা। এভাবে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক এবং বিভিন্ন পদে জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। দ্রুত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগের দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, উপজেলার মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বর্তমানে প্রতিদিন রোগীদের সংখ্যা দাড়ায় প্রায় ৭০-৮০ জন। উন্নীতকরণের এতগুলো বছর পরেও বাড়তি অবকাঠামোর জন্য কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে কর্মরত চিকিৎসকদের নিজ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পালন করতে হচ্ছে অতিরিক্ত দায়িত্ব। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মোট ১৪৮ জনের পদ থাকলেও বর্তমানে পদ শূন্য অবস্থায় রয়েছে ৬৪টি গুরুত্বপূর্ণ পদ। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদ। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১০টি। বর্তমানে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পদই রয়েছে শূন্য। এছাড়াও মেডিকেল অফিসার পদ রয়েছে ১৯ জনের। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৬টি পদে মেডিকেল অফিসার। এছাড়াও স্বাস্থ্য সহকারী ৩০ জনের মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৪ জন। এতগুলো পদ শূন্য থাকায় কর্মরত ডাক্তারের পরিবর্তে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন ডাক্তারের সহকারী। জনবল সংকটে অতিরিক্ত রোগীদের চাপে পড়লে তারা বিভিন্ন আধুনিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে করে থাকেন রেফার্ড।
হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কামরুন্নাহার নামের একজন জানান, আমি আমার মেয়ে বাচ্চার চিকিৎসা করাতে এসেছিলাম। এসে জানতে পারি, তাদের এখানে শিশুদের জন্য ভালো চিকিৎসক নেই। পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলায় চিকিৎসা নিতে পরামর্শ প্রদান করেন আমাকে।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন এলিট রক্তদান ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. আবু হোসেন জানান, দুপুরের পরে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ডোনারদের থেকে রক্ত নিতে চান না। পাশাপাশি প্রায় সময় চিকিৎসকরা রক্ত পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত মেডিসিন না থাকার কথা বলে ডোনারদের থেকে অতিরিক্ত সময় নিয়ে থাকেন। এতে করে সঠিক সময়ের মধ্যে রোগীদের নিকট রক্ত প্রদানে অসুবিধা হয়ে থাকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আসাবিক মেডিকেল চিকিৎসক ডা. জহুরুল ইসলাম জানান, জনবল সংকট নিরসন না হলে এত অল্প জনবল দিয়ে সঠিক সেবা কখনো দেয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি উপজেলায় এমন জনবল সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে। আমরা দায়িত্বে থাকা জনবল দিয়ে উপজেলার ১টি পৌরসভা এবং ৮টি ইউনিয়নের মানুষকে সব্বোর্চ সেবা প্রদানের চেষ্টা করি। জনবল শূন্য পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে সেবার মান আরো ভাল হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।