জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ঘুষ কম দেওয়ায় সেবাপ্রত্যাশীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অফিস সহকারী আলাউদ্দিনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৪ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মহফেজখানায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী আলমগীর জমির পর্চা উঠাতে গেলে দুই হাজার টাকা ঘুষ চান তারা। এসময় দুশো টাকা দেওয়ায় উত্তেজিত হয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ভুক্তভোগী আলমগীর বরিশাল নগরীর রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিমের ছেলে।
আলমগীরের অভিযোগ, জমির পর্চা উত্তোলন করার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মহফেজখানায় যান। তখন সেখানে উপস্থিত আলাউদ্দিন জমির পর্চা উত্তোলন করে দিতে দুই হাজার টাকা চান। তখন ‘পর্চা উত্তোলন করতে এতো টাকা দরকার হয় না’ জানিয়ে আলমগীর দুশো টাকা দিতে চান। এরপর আলাউদ্দিন উত্তেজিত হয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেন। এসময় আরও কয়েকজন ব্যক্তি ছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আহত আলমগীরকে উদ্ধার করে পাশের ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেই ফার্মেসিতে আহত আলমগীর চিকিৎসা গ্রহণকালে উপস্থিত ছিলেন মহফেজখানার রেকর্ড কিপার জাহাঙ্গীর। এসময় জাহাঙ্গীর বলেন, আলাউদ্দিন গত তিন মাস আগে অবসরে গেছেন।
তবে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে তিনি এখন রেকর্ড রুমে কাজ করছেন। অবসরে যাওয়ার পরেও রেকর্ড রুমে কর্মরত থাকতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি রেকর্ড কিপার জাহাঙ্গীর। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত অফিস সহকারী আলাউদ্দিন অফিস ছেড়ে চলে যাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এসব বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (মহফেজখানা) তাসফিয়া কবির ঐশী বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, আলাউদ্দিন কয়েক যুগ বরিশাল মহফেজ খানায় কর্মরত থাকার কারণে সকল গোপন নথিপত্র তার নিয়ন্ত্রণে। সেসব গোপন নথিপত্র দিয়ে অবৈধ বাণিজ্য করেন আলাউদ্দিন ও রেকর্ড কিপার জাহাঙ্গীর। এছাড়া বহিরাগতদের দিয়ে রেকর্ড রুমের কাজ করান জাহাঙ্গীর। গত বছর বরিশাল রেকর্ড রুমে চুরির ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাও দায়ের করা হয়।