হোসাইন মোহাম্মদ দিদার, (দাউদকান্দি) কুমিল্লা: বর্ষা আসলে বাড়ে ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ। তবে গেল বছরের তুলনায় এবার বর্ষা আসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। এবার এডিশ মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দাউদকান্দি পৌরসভার (৬ নং ওয়ার্ড, দোনারচর -সবজিকান্দি) ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পৌরসভায় একসপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ১০ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গত সপ্তাহে সবজিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা জানে আলম নামের এক তরুণ ব্যবসায়ী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি সুস্থ হলে আতঙ্কে দিন কাটছে তার । কথা হলে তিনি জানান," আমার এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। আশপাশের ময়লার ভাগাড়। ড্রেনেজ অব্যবস্থার কারণে পয়োনিষ্কাশন হয় না এতে ময়লা জমে ডেঙ্গু মশার বিস্তার হয়। ফলে এ মশা কামড়ালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমি আক্রান্ত হয়ে এখন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ কিন্তু আমার আতঙ্কে দিন কাটছে কারণ আমার পরিবারের সদস্যরাও ঝুঁকি নিয়ে দিনাতিপাত করছে। "
একই এলাকার বাসিন্দা ড. মোশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পুড়য়া এক শিক্ষার্থীর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই শিক্ষার্থী বর্তমানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। বুধবার দুপুরে দাউদকান্দি মডেল থানায় কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) সরোয়ার হোসেন নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও একটি সূত্রে জানা গেছে। তিনি বর্তমানে ডিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
দিনদিন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবরে পৌরসভার দোনারচর, সবজিকান্দি, পৌর বাজার এলাকার আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এদিকে এই পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগে পৌরসভা কর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত মশক নিধনের পদক্ষেপ হাতে নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খন্দকার বিল্লাল হোসেন সুমন।
সাংবাদিক ও সমাজকর্মী তৌফিক রুবেল জানান, "এবার বর্ষা আসার আগেই দাউদকান্দি পৌরসভায় ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ বাড়ছে। কোথাও কোথাও এই রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, এতে মানুষ এই মুহুর্তে আতঙ্কে আছে। তাই আমি পৌর প্রশাসকের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি আপনারা দ্রুত মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ করুন। এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করুন।
এ বিষয়ে পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান," আমি শুনেছি পৌরসভার ৫ নং ও ৬ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক। তবে আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মশক নিধন কর্মসূচির আওতায় মশার ওষুধ স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করেছি। এটি একটি চলমান পক্রিয়া।
সেইসঙ্গে পৌরবাসির প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা যত্রতত্রে ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। নিজ নিজ বাসস্থান, আঙিনা, বারান্দা পরিস্কার রাখুন। এতে করে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভালো হলে কিংবা জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেলে আমরা নিরাপদ থাকতে পারব। এবং এতে মশার বংশবিস্তার ও সংক্রমণ রোধ হবে। কারণ এখন বর্ষাকাল পাশাপাশি বৃষ্টি হলে ময়লার পানি জমে থাকলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।"