বাংলাদেশ এখন আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে থেকে শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা তো ঋণের বোঝা নিতে চাই না। এখন আর আইএমএফ ডিপেনডেন্ড না আমরা। এখন আর আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ডিপেনডেন্ড না আমরা।”
বাজেট সহায়তার বিষয়ে আইএমএফের শর্ত থাকে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আইএমএফের ব্যাপারে অনেক শর্ত থাকে, আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। আমরা বাজেট নিজেদের মতো করে করতে চেষ্টা করবো।”
আন্তর্জাতিক এ সংস্থার সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি বজায় রাখতে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নেব আমাদের মতো। এতে আইএমএফ কিস্তি দিলে দেবে, না দিলে নিজেদের মতো করে বাজেট করবো।”
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, “আইএমএফ থেকে কোন রকম টাকা না নিয়েই তো ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ও ফরেন রিজার্ভ স্ট্যাবল। আমরা কিন্তু আইএমএফ থেকে আর টাকা পাইনি এ গর্ভনমেন্ট আসার পর।”
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরে অর্থ উপদেষ্টা মঙ্গলবারই প্রথম অফিস করেন। ছয় দিনব্যাপী এ বৈঠক শেষ হয় ২৬ এপ্রিল।
২০২২ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে আইএমএফের দ্বারস্থ হয় তখনকার সরকার। নানা শর্ত জুড়ে দিয়ে চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দেয় তখন সংস্থাটি। পরে তিন কিস্তিতে ছাড় হয় ২৩১ কোটি ডলার।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর, গত বছরের ডিসেম্বরে আইএমএফ মিশন বাংলাদেশ ঘুরে যায়। নানা শর্ত পূরণ করতে না পারায় শঙ্কা তৈরি হয় ঋণের বাকি অর্থ ছাড় নিয়ে।
সবশেষ এ মাসেও ঢাকায় আসে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল। তাদের ১২ দিনের সফরও শেষ হয় কোনো সমঝোতা চুক্তি ছাড়া। এতে সংস্থাটির ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি পাওয়া যাবে কি-না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “সার্বিকভাবে আমাদের প্রজেক্টের ব্যাপারে তেমন অসুবিধা দেখছি না। বাজেট সাপোর্টের ব্যাপারে আইএমএফের সাথে একটু আলোচনা করছি।”